বিধাননগর, 15 ডিসেম্বর : শিলনোড়া দিয়ে একবার নয় বারবার মাথায় আঘাত করে খুন করা হয়েছে বছর 25-এর অর্জুন মেহেনসারিয়াকে ৷ বাড়ির একতলার ঘরের মেঝেতে এখনও রয়েছে সেই ছোপ ছোপ রক্তের দাগ ৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে ওই রক্তাক্ত দেহের উপর ঢালা হয় ঘি, কর্পূর ৷ তারপরই ছুঁড়ে দেওয়া হয় দেশলাই ৷ কয়েকবারের চেষ্টায় আগুন লেগেও গিয়েছিল প্রাণহীন সেই শরীরে ৷ কিন্তু ততক্ষণে হুঁশ ফিরেছে 'খুনিদের' ৷ ঘরের সমস্ত দরজা-জানলা বন্ধ ৷ পোড়া গন্ধ, ধোঁয়ায় ভোরে গিয়েছে সারা ঘর ৷ বাইরের বাতাস ঘরের ভিতরে আসার কোনও পথ নেই ৷ আর সেটা বুঝতে পেরেই চাদর চাপা দিয়ে নেভানো হয় আগুন ৷ ছেটানো হয়েছিল জলও । দেহ চাদরে জড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির ছাদে ৷ পচা দুর্গন্ধ যাতে না বের হয় তার জন্য ফের সেই দেহে ঢালা হয় ঘি, কর্পূর ৷ তারপর ছাদের একটি কোণে ফেলে রাখা হয় দেহ ৷ সল্টলেকের এ জে ব্লকে যুবক খুনের ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে এমন তথ্য জানাতে পেরেছে পুলিশ । যদিও পুরোটা এখনও বাকি রয়েছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের । তদন্তে আরও তথ্য় উঠে আসার সম্ভাবনা । যদিও এত কিছুর পরও শেষ রক্ষে হয়নি ৷ বাবা অনিলকুমার মেহেনসারিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে অর্জুনের খোঁজ শুরু করে পুলিশ ৷ তারপরই সামনে আসে বিষয়টি ৷
ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার বিভিন্ন সময় সল্টলেকের এ জে ব্লকের ওই বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছেন তদন্তকারীরা ৷ বাড়ির একতলার ঘর থেকে শুরু করে তিনতলার ছাদ, প্রতিটি জায়গায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছেন গোয়েন্দারা ৷ পাশাপাশি অর্জুনের বোন বৈদেহী মেহেনসারিয়ারও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ ৷ পুলিশের একাংশের অনুমান বিষয় সম্পত্তির জেরেও খুন হয়ে থাকতে পারেন অর্জুন ৷ তাই সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই ৷ 11 ডিসেম্বর রাতেই খুনে জরিত সন্দহে গ্রেপ্তার করা হয় মা গীতা মেহেনসারিয়া ও ভাই বিদুরকে ৷ গতকাল রাতেও ঘটনাস্থানে যায় পুলিশ ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ৷ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় খুনে অভিযুক্ত গীতা ও বিদুর মেহেনসারিয়াকে ৷ ছিলেন বিধাননগর গোয়েন্দা প্রধান রাহুল গোস্বামীও ৷ ফের চলে তল্লাশি ৷ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বাড়ি মেইন গেট ও ভিতর থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন ৷