পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বোনের স্মৃতিতে গড়া হাসপাতাল কোয়ারানটাইনের জন্য দিতে চান বারুইপুরের ট্যাক্সি ড্রাইভার - taxi driver saidul

বোনের স্মৃতিতে হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন বারুইপুরের এক ট্যাক্সিচালক । এবার সেই হাসপাতাল কোয়ারানটাইন সেন্টার কারার জন্য সরকারকে দিয়ে দিতে চান তিনি ।

ছবি
ছবি

By

Published : Apr 12, 2020, 8:08 AM IST

Updated : Apr 12, 2020, 9:39 AM IST

কলকাতা, 12 এপ্রিল : তিনি আবারও বোঝালেন কতটা সহৃদয় । বোঝালেন যে মন কি বাত অনুষ্ঠানে কেন প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রচেষ্টাকে নতুন শক্তি বলে মন্তব্য করেছিলেন । একদিকে যখন বীরভূমে কোয়ারানটাইন সেন্টার খুলতে গেলে মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখন বারুইপুরের সইদুল লস্কর সরকারের কাছে প্রস্তাব রাখলেন তাঁর নিজের হাতে গড়া হাসপাতালে কোয়ারানটাইন সেন্টার করা হোক । সেটা করতে গিয়ে তাঁকে ছাড়তে হবে ঘর । তাতেও কুছ পরোয়া নেহি । এর মাধ্যমে বোঝালেন, কোরোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাশে থাকতে চান তিনিও। সইদুল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ব্লক ডেভেলপমেন্ট আধিকারিক হাসপাতাল দেখে গিয়েছেন । যেহেতু চিকিৎসার প্রাথমিক সুবিধা আছে, তাই এই হাসপাতালে কোয়ারানটাইন সেন্টার গড়ে তুলতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় । জেলা প্রশাসনের সবুজ সঙ্কেত মিললেই সইদুলের ইচ্ছের বাস্তবায়ন হবে।

সালটা ছিল 2004 । বারুইপুরের পূর্ণি গ্রামের মারুফা খাতুনের মৃত্যু হয় সাধারণ বুকের যন্ত্রণায় । চোখের সামনে দেখা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না সইদুলের । তারপর থেকে জেদ চেপে যায় । সংকল্প নেন তাঁর এলাকার কাউকে আর বিনা চিকিৎসায় মরতে দেবেন না । তারপর থেকেই যখন ট্যাক্সি চালাতেন তখন সওয়ারিদের শোনাতেন নিজের ইচ্ছের কথা । চাইতেন দান । কিন্তু, হাসপাতাল গড়ার টাকা জোটেনি । তখন 1993 সাল থেকে ট্যাক্সি চালিয়ে কেনা আরও তিনটি ট্যাক্সি বিক্রি করে দেন তিনি । বিক্রি করে দেন বিবির গয়না । সেভাবেই গড়ে ওঠে তিনতলা হাসপাতাল । নাম দেওয়া হয় বোন মারুফার নামেই । সইদুলের দাবি, সেখানে রোজ বহু মানুষের চিকিৎসা হয় । মাত্র কুড়ি টাকার বিনিময়ে দেখা হয় আউটডোর রোগীদের । আবার সেই হাসপাতালে একটি ঘরে নিয়ে এখন থাকেন তিনি। সেখানেই কোরোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের এই আবহে বহু লড়াইয়ের সঙ্গী বিবি শামিমার সঙ্গে আলোচনা করেন বিষয়টি নিয়ে। কোয়ারানটাইন হলে তাঁদের সে ঘর ছাড়তে হবে । তাতে কী ? বিবি এক কথায় রাজি। তারপর আর ফিরে তাকাননি।

বারুইপুরের BDO মোশারফ হোসেন হাসপাতাল ঘুরে দেখে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্য দপ্তরে। তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন সইদুলের এই ইচ্ছেশক্তিকে। আর সইদুল? হাসপাতলে কোয়ারেনটাইন হবে কি না জানেন না। তবে মুখ্যমন্ত্রীর লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইতিমধ্যেই তাঁর বিশেষ রিলিফ ফান্ডে দান করেছেন 5000 টাকা ।

Last Updated : Apr 12, 2020, 9:39 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details