কলকাতা , 16 সেপ্টেম্বর : মৃত্যুর দুই মাস পরে অবশেষে কোরোনা রোগীর দেহ খুঁজে পেলেন পরিজনরা । এতদিন পর্যন্ত মৃতদেহ সৎকার করা হয়নি ৷ পুলিশ মর্গেই রাখা ছিল তাঁর দেহ ৷ কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনা ৷
কোরোনায় আক্রান্ত প্রিয়জনের মৃত্যুর কথা জানতেন পরিজনেরা । কিন্তু, মৃত্যুর পরে তাঁদের প্রিয়জনের দেহের কী হল , সৎকার করা হয়েছে কি না অথবা কোনও মর্গে রাখা হয়েছে কি না, এইসব বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না । এমনকী , কোনও ডেথ সার্টিফিকেটও তাঁরা পাননি । কার্যত দুই মাস নিখোঁজ ছিল তাঁর দেহ । দমদম এয়ারপোর্টের দুই নম্বর গেট অঞ্চলের বাসিন্দা বছর 54-র এই ব্যক্তিকে 17 জুলাই কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল । তবে, তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি । কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে , ওইদিন রোগীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল ৷
2 মাস পর কোরোনায় মৃত প্রিয়জনের দেহ মিলল মর্গে ! - কোরোনাভাইরাস আপডেট
17 জুলাই কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এয়ারপোর্ট এলাকার বাসিন্দা কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৷ তিনি কোরোনায় আক্রান্ত হওয়ায় মৃত্যুর পরেই পরিবারের লোকেদেরও কোয়ারানটিনে রাখা হয়েছিল ৷ কোয়ারানটিন পর্ব শেষ হওয়ার পর তাঁরা কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে রোগীর ডেথ সার্টিফিকেট চান । দেহ সৎকার করা হয়েছে কি না সেই বিষয়ে খোঁজ শুরু করেন । কিন্তু কোনও খোঁজ পাচ্ছিলেন না ৷
পরিবারের লোকেরাও জানতেন, ওইদিনই কোরোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ৷ কিন্তু, এরপরে তাঁরা তাঁদের প্রিয়জনের দেহের বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে অভিযোগ । কারণ, এই রোগীর মৃত্যুর পর প্রথমে তাঁদের কয়েকদিন কোয়ারানটিনে থাকতে হয়েছিল । কোয়ারানটিন-পর্ব শেষ হওয়ার পর, কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে রোগীর ডেথ সার্টিফিকেট চান তাঁরা । দেহ সৎকার করা হয়েছে কি না, সেই বিষয়েও খোঁজ শুরু করেন । অভিযোগ , ডেথ সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য শ্মশান থেকে এই রোগীর বিষয়ে তথ্য নিয়ে আসার কথা বলা হয় হাসপাতালের তরফে।
এদিকে ধাপায় অবস্থিত ওই শ্মশান থেকে তাঁরা জানতে পারেন, ওই রোগীর নামে কোনও মৃতদেহ সৎকার করা হয়নি । তাহলে তাঁদের প্রিয়জনের মৃতদেহের কী হল ? দেহের সৎকার করা হয়েছে , নাকি দেহ এখনও মর্গে রয়েছে ? এইসব বিষয়ে জানতে তাঁরা ফের কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যান । পরে পুলিশের কাছেও যান । অভিযোগ, হাসপাতাল, শ্মশান এবং পুলিশের কাছে যাওয়া সত্ত্বেও তাঁরা মৃতদেহের কোনও খোঁজ পাচ্ছিলেন না । অবশেষে 14 সেপ্টেম্বর অর্থাৎ সোমবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে মৃত প্রিয়জনের ডেথ সার্টিফিকেট চেয়ে লিখিত দেন তাঁরা ।
এই অভিযোগের জেরে নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসন । আর তার জেরে মৃত্যুর দুই মাস পর গতকাল কলকাতা পুলিশের মর্গে কোরোনা রোগীর দেহের খোঁজ পান পরিজনেরা । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে , এই রোগীকে মৃত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে আইন অনুযায়ী তাঁর দেহ ময়নাতদন্ত করা হয় । এদিকে, কোরোনা রোগীদের মৃতদেহ সৎকার করে প্রশাসন । তবে, এক্ষেত্রে পরিজনদের সম্মতি প্রয়োজন হয় । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই রোগীর মৃতদেহ সৎকারের জন্য কোয়ারানটিন-পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কোনও কারণে হয়ত তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি । ফলে, এতদিন পরিজনদের সম্মতি পাওয়া যায়নি । তাই , মৃতদেহ কলকাতা পুলিশের মর্গে রাখা ছিল ।