কলকাতা, 17 অগস্ট:পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়ি থেকেই চলত নিয়োগ দুর্নীতি ৷ প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতেই তৈরি হয়েছিল অস্থায়ী অফিস। আর সেই বাড়ির নীচের অস্থায়ী অফিস থেকেই চলত নিয়োগ দুর্নীতির প্ল্যানিং। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে পেশ করার পর বিচারকের সামনে এমনই দাবি করেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। একই সঙ্গে, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, সেই অস্থায়ী দফতরেই আসতেন নিয়োগ দুর্নীতির এজেন্টরা ৷
এদিন সিবিআইয়ের দাবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়ির নীচে তৈরি হয়েছিল অস্থায়ী অফিস। আর সেই অফিসে মাঝেমধ্যে আসতেন ধৃত প্রসন্ন রায়-সহ নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের একাধিক তাবড় এজেন্টরা। জানা গিয়েছে, ওই অফিসেই বসতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে। শুধু বিভিন্ন জেলার এজেন্টরা নয় বরং ওই বাড়িতে আসতেন সুবিরেশ ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহা-সহ একাধিক প্রভাবশালীরা। মূলত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেই অফিসে বসেই নিয়োগ দুর্নীতির যাবতীয় পরিকল্পনা করা হত বলেও দাবি করেছে সিবিআই। আর সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতেন সুবিরেশ ভট্টাচার্য।
বর্তমানে সুবিরেশ ভট্টাচার্য, শান্তি প্রসাদ সিনহা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের-সহ একাধিক প্রভাবশালীরা জেল হেফাজতে। এদিন সিবিআইয়ের তরফে অভিযোগ করে বলা হয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই পরিকল্পনাগুলিকে বাস্তবায়িত করিয়ে দেওয়ার জন্য সুবিরেশ ভট্টাচার্যকে শিক্ষা দফতরের উচ্চপদে বসানো হয়েছিল। সিবিআইয়ের তরফে যখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতে এই অভিযোগ করা হয়, ঠিক সেই সময় পালটা তাঁর তরফ থেকে জানানো হয়, পার্থ যখন মন্ত্রী হয়েছিলেন তার অনেক বছর আগে থেকেই সুবিরেশ ভট্টাচার্য দফতরের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল অভিযুক্ত হলেও অভিষেকের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই, আদালতে সওয়াল সিংভির
অন্যদিকে, এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিচারককে জানান, তাঁর শরীর খারাপ। ফলে তাঁকে জেলে কোনও সহকারী দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে বিচারক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বলেন এটা তো সংশোধনাগারের ব্যাপার ৷ তাঁকে সেখানেই আবেদন করতে বলেন বিচারক। এদিন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে সকাল সাড়ে 11টা নাগাদ আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় ৷ সেখানেই সাংবাদিকরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রাক্তন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে প্রশ্ন করা হয় ৷ যদিও সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি এদিন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ৷ অন্যদিকে, সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারকের উদ্দেশে তিনি আর্জি জানিয়ে বলেন, "আমায় জেলের মধ্যে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট দেওয়া হোক ৷" যদিও বিচারক জানান, এটা জেল কর্তৃপক্ষের ব্যাপার ৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায় ফের বলেন, "স্যার, আপনার অনুমতি প্রয়োজন ৷" কোর্ট যদিও এবিষয়ে কোনও স্পষ্ট নির্দেশ দেয়নি ৷