কলকাতা, 7 এপ্রিল:রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কেমন চলছে, তা নিয়ে এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজভবনে ৷ রাজভবনের তরফে বৃহস্পতিবার রাতে এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ৷ তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক সমস্ত কাজকর্ম সম্পর্কে রাজ্যপাল তথা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলির আচার্য সি ভি আনন্দ বোসকে রিপোর্ট দিতে হবে উপাচার্যদের ৷ নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, রাজভবনের সবুজ সংকেত ছাড়া কোনও আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না ৷ রাজভবনের এই সিদ্ধান্তে কি নতুন করে রাজ্য এবং রাজভবনের মধ্যে সম্পর্কে শৈত্য তৈরি হবে ? পবিত্র সরকার, অমল মুখোপাধ্যায়, রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তীর মতো শিক্ষাবিদরা বলছেন, এমন সিদ্ধান্ত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ৷ বাস্তবে রাজ্যপাল এই পদক্ষেপ করতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে ৷ কেন সরাসরি উপাচার্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছেন আচার্য, তা নিয়েও উঠবে প্রশ্ন ৷
এই বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "রাজ্যপালের নির্দেশটা আমি দেখেছি ৷ আমার মনে হয়, রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাব্যবস্থায় অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ ৷ কারণ, ইউজিসি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে যে অর্থ প্রদান করে, তা যৎসামান্য ৷ রাজ্য সরকারগুলিকেই এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ খরচ বহন করতে হয় ৷ ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে শিক্ষকদের বেতন, পঠনপাঠনের সমস্ত খরচ বহন করে রাজ্য সরকার ৷ এক্ষেত্রে ইউজিসি যদি শিক্ষককে নিয়োগ করেও, তাহলেও মাত্র 5 বছর তারা বেতন দেয় ৷ বাকিটা বহন করতে হয় রাজ্য সরকারকে ৷ যদিও শিক্ষা যুগ্ম তালিকাভুক্ত বিষয়, তবুও ইউজিসি প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় কোনও টাকাই দেয় না রাজ্যকে ৷ তাই একজন রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসাবে কীভাবে এই হিসেব চাইতে পারেন, সেটাই আমার মাথায় আসছে না ৷"
এই শিক্ষাবিদ আরও জানান, "কেন্দ্র যে অর্থ দেয়, সেই অর্থ তো কেন্দ্রীয় সরকার তাদের মতো করে বুঝে নেয় ৷ আলাদা করে তার উপর নজরদারির কোনও দরকার আছে কি ? রাজ্য যে টাকা দিচ্ছে, তা পর্যালোচনা করার জন্য ক্যাগ আছে, রাজ্যের অর্থ দফতর আছে ৷ তারাই তাদের মতো করে বুঝে নেয় ৷ এদিক থেকে দেখতে গেলে অবশ্যই তা রাজ্যের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ বই কী !"