কলকাতা, 27 এপ্রিল : রথযাত্রা উৎসবের সময়ও যদি কোরোনা সংক্রমণ চলতে থাকে, তাহলে বাতিল হতে পারে রথযাত্রা উৎসব । আজ এমনই সিদ্ধান্ত নিল ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ISKCON)-র কলকাতা শাখা ।
23 জুন রথযাত্রা । তবে, রথযাত্রা উৎসবের সময়ও কোরোনা আতঙ্ক থাকবে বলেই আশঙ্কা করছে সকলে । তাই অন্যান্য বছরের মতো সাড়ম্বরে পালিত হবে না এবারের রথযাত্রা উৎসব । পরিস্থিতি সেরকম থাকলে রাস্তায় নামানো নাও হতে পারে রথ । সেক্ষেত্রে পুজো হবে মন্দিরের ভিতরেই । যে রথে চেপে জগন্নাথ মাসির বাড়ি যান, সেই রথের মেরামতের কাজ শুরু হয় অক্ষয় তৃতীয়ায় ।
ISKCON-র কলকাতা শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মুখপাত্র রাধারমণ দাস বলেন, "এই পরিস্থিতিতে কীভাবে সব দিক সামলে ও সামাজিক দূরত্ব মেনে রথযাত্রা সুসম্পন্ন করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে । এখনও পর্যন্ত যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা হল এবছর তিনটি ট্রেলারের উপর বিগ্রহ বসানো হবে । প্রতি ট্রেলারে একজন করে পুরোহিত থাকবেন । আমরা প্রতিবছর যে পথ ধরে যায়, সেই পথ ধরেই ধীরে ধীরে গাড়িগুলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে । যাতে সবাই নিজেদের বাড়ির জানালা বা বারান্দা দিয়ে দর্শন করতে পারেন । সেক্ষেত্রে বাড়ির থেকে নেমে দর্শন বা রথের দড়ি টানার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকবে । এই যাত্রাপথে ভক্তদের সমাগম থাকবে না । তবে এই জন্য প্রশাসনের পূর্ণ সহায়তার প্রয়োজন পড়বে । তবে জুন মাসেও কোরোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে হয়তো এই যাত্রা বাতিল করা হতে পারে ।"
তিনি আরও বলেন, "পুরীর রথযাত্রার পরই সর্বাধিক ভক্ত সমাগম হয় কলকাতার রথযাত্রা উৎসবে । আমরা কোনওভাবেই চাইনা যে, রথযাত্রার জন্য যে সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ করা হয়েছে তা কেউ লঙ্ঘন করুক । কারণ এই নয় কিলোমিটার পথে প্রায় দুই-তিন লাখ মানুষের ভিড় হয় । গতবার তিনটে বিশাল রথের সঙ্গে প্রায় 20টি ট্রাক ছিল । এই বিশেষ দিনে কলকাতার লাখ লাখ ভক্তরা পা মেলান এই যাত্রায় । এ বছর 49তম বছরে পা দেবে রথযাত্রা উৎসব । কলকাতায় নয় দিন ধরে এই উৎসবটি পালিত হয় । প্রায় 15 থেকে 20 লাখ মানুষ এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন । গতবারের কলকাতা রথযাত্রায় পৃথিবীর 90টি দেশ থেকে ভক্তদের সমাগম হয়েছিল এখানে ।" এছাড়া, এবার লকডাউনের পরিস্থিতির দিকে নজর দিয়ে ইতিমধ্যেই ISKCON সমাজের পিছিয়ে পড়া ও দুস্থ মানুষদের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে ।