কলকাতা, 27 জুলাই : জন্মগত কারণে প্রথম থেকেই ছিল শারীরিক ত্রুটি । অথচ, 14 বছর বয়স পর্যন্ত রোগীর তেমন কোনও সমস্যা হয়নি, যার কারণে পরিজনরাও কিছু আঁচ করতে পারেননি । এ দিকে, 6 জুন থেকে মাত্র দু'দিনের মধ্যে নাবালিকার শারীরিক অবনতি এতটাই হয়ে পড়ে যে, তা পৌঁছে যায় যমে-মানুষে টানাটানির অবস্থায় । চিকিৎসকরাও বুঝতে পারছিলেন না কোন কারণে এই রোগীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হচ্ছে । শেষ পর্যন্ত তাঁরা পেট কেটে দেখার সিদ্ধান্ত নেন । অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন সমস্যা কোথায় । অবশেষে, মৃত্যুর মুখ থেকে রোগীর জীবন ছিনিয়ে আনেন তাঁরা । তবে, এরপরও সমস্যা দেখা দিয়েছিল । শেষ পর্যন্ত রোগীকে সুস্থ করলেন চিকিৎসকরা । ঘটনাটি SSKM হাসপাতালের ।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী পরিণীতা দাস । 14 বছরের এই নাবালিকা পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নাথানা এলাকার বাসিন্দা । তার বাবা গ্রামের হাটে কাপড় বিক্রি করেন । 6 জুন আচমকা অসুস্থ বোধ করে পরিণীতা । প্রথমে পেটে ব্যথা,পরে বমি হয় তার । পরিবারের সদস্যরা তাকে তমলুকের হাসপাতালে নিয়ে যান । তবে হাসপাতাল থেকে রোগীকে কলকাতায় রেফার করে দেওয়া হয় ৷ নাবালিকাকে ভরতি করা হয় বজবজ মেডিকেল কলেজে । সেখান থেকে তাকে আবারও রেফার করা হয় SSKM হাসপাতালে । পরের দিন সকাল সাতটা নাগাদ ভরতি হয় সে । চিকিৎসকরা দেখেন, রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে । কেন এই সমস্যা, তা জানতে পরীক্ষা করা হয় । কিন্তু কোনও সমস্যার কারণই চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি । অবশেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পেটে অস্ত্রোপচারের ৷
পরের দিন অর্থাৎ 8 জুন বিকাল চারটে নাগাদ অপারেশনের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয় । ওই দিন বিকাল তিনটে নাগাদ নাবালিকাকে যখন অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানো হবে, তখন তার হার্ট অ্যাটাক হয় । ঘণ্টা খানিকের চেষ্টায় চিকিৎসকরা এই কিশোরীর হৃদযন্ত্র সচল করতে পারেন । তবে, তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, এই অবস্থার মধ্যেই অস্ত্রোপচার করা হবে । এরপর নাবালিকার পেট কেটে চিকিৎসকরা দেখেন, রোগীর পেটের বাঁদিকে হার্নিয়া রয়েছে । সেখানে গ্যাংগ্রিন হয়ে গেছে । রোগীর অন্ত্রে রেয়েছে ফুটো । সেই ফুটো থেকে পরিপাক হওয়া খাবার বেরিয়ে এসে রক্তে মিশেছে । সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে । ওই হার্নিয়া সেপসিস হয়ে গেছে । যার জেরে সেপটিক শক হয় নাবালিকার । এই সেপটিক শকের কারণেই হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল ।