কলকাতা, 28 এপ্রিল :টানা 58 দিন বৃষ্টি নেই দক্ষিণবঙ্গে । কলকাতা দেখল দীর্ঘ শুষ্কতম গ্রীষ্ম । পরিসংখ্যান বলছে এর আগে 2006 সালে এরকম বৃষ্টিহীন পরিস্থিতি দেখেছিল কলকাতা । সেবার মার্চ এবং এপ্রিল মিলিয়ে 43 দিন বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়নি । 16 বছর পরে কেন ফের এই পরিস্থিতি ?
এই বিষয়ে আলিপুর আবহাওয়া (Weather Forecast of West Bengal) অফিসের উপ-অধিকর্তা সঞ্জীবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এবারের থেকেও বেশি তাপমাত্রার পারদ চড়ার নজির আমাদের কাছে রয়েছে । কিন্তু এবারের পরিস্থিতি আলাদা । কারণ একসঙ্গে এতগুলো জেলায় তাপপ্রবাহের এই নজির কম । আজ যদি দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আসা বাতাস জোরালো থাকত তাহলে এই তাপপ্রবাহ বাঁকুড়া, বীরভূম ও পুরুলিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত । যেহেতু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আগত বাতাস সেভাবে নেই ফলে গরম বাতাস প্রায় উপকূল পর্যন্ত চলে এসেছে । শুধুমাত্র তাপপ্রবাহ থেকে ছাড় পেয়েছে দিঘা, কলকাতা, ডায়মণ্ডহারবারের মত উপকূলবর্তী এলাকাগুলো । আগে কয়েকটি জায়গার মধ্যে তাপপ্রবাহ সীমাবদ্ধ থাকলেও এবারের মত পুরুলিয়া থেকে দমদম পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকা তাপপ্রবাহের কবলে পড়েনি ।"
আরও পড়ুন :Heat In Bengal : তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা বঙ্গবাসীর
প্রায় একই সঙ্গে তিনি বলেন, "কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আপাতত তাপপ্রবাহের সতর্কতা নেই । যে ধরনের শুষ্ক গরম আবহাওয়া রয়েছে তার বিশেষ পরিবর্তন হবে না । মার্চ-এপ্রিল মিলিয়ে ছ'টি কালবৈশাখী সাধারণত দেখা যায় । এবার তারও দেখা নেই । আবহাওয়ার এহেন পরিবর্তনের নেপথ্য কারণ জানাতে গিয়ে সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ঝড় বৃষ্টির জন্য মূলত বাতাসে জলীয় বাষ্প দরকার । বৃষ্টি হতে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্প প্রয়োজন বাতাসে তা নেই । দ্বিতীয়ত হাওয়া যদি থাকে তা উপরে উঠে যাবে । হাওয়া যদি উপরে না ওঠে তাহলে হাওয়ার সঙ্গে জলীয় বাষ্প উপরে উঠবে না । হাওয়া উপরে না উঠলে ঝড় বৃষ্টি হয় না । এই সময় ছবিটা ভিন্ন । হাওয়া উপরে ওঠার বদলে নিচে নামছে । এর ফলে তাপমাত্রা বাড়ছে । ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে যে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে তা বঙ্গের দিকে চলে আসে । এবার জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস উত্তর-পূর্ব ভারতের দিকে চলে যাওয়ায় হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলে ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে ।"
আরও পড়ুন :Heat Wave in Malda : মালদায় তাপমাত্রার পারদ ছুঁল 43 ডিগ্রি, বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই