কলকাতা, 3 মে : কয়েকদিন আগে থেকেই জিনিসপত্র গোছাতে শুরু করেছিলেন ভিনরাজ্যে আটকে থাকা আবদুল, মইনিউদ্দিনের মতো শ্রমিকরা । কেন্দ্র বলেছে, তাঁদের নিজের নিজের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে । বাকি শুধু সময়ের অপেক্ষা । আনন্দেই ছিলেন তাঁরা সকলে । দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরতে পারবেন । পরিবারের সকলের সঙ্গে থাকতে পারবেন । লকডাউনে যেভাবে আধপেটা খেয়ে দিন কাটছে, হয়তো এবার তার অবসান হবে । এই আশাতেই ছিলেন ভিনরাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার ।
তবে, চিন্তা যেন কোনওভাবেই পিছু ছাড়ছে না তাঁদের । গতকালই তাঁরা জানতে পেরেছেন, কেন্দ্রের তরফে যে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেই 'শ্রমিক স্পেশাল'-এ চড়ে বাড়ি যেতে নিজেদের পকেট থেকেই টাকা দিতে হবে । যেখানে, নিজেদের দু'বেলা খাবার জোটাতে হিমশিম হতে হচ্ছে, সেখানে ট্রেনের ভাড়া কীভাবে দেবেন, তা-ই ভেবে কূল পাচ্ছেন না শ্রমিকরা ।
এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছেন বিরোধীরাও । তাঁদের মতে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত অমানবিক । যাঁরা ভিনরাজ্যে আটকে পড়েছেন, তাঁরা দু'বেলা খেতে পাচ্ছেন না । তাঁরা কোথা থেকে টাকা জোগাড় করে ট্রেনের ভাড়া দেবে ? রেলমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে একাধিক রাজ্য । রেলমন্ত্রকের এই ভূমিক নিয়ে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল । রাজ্যের শাসক দল বিষয়টিকে কেন্দ্রীয় সরকারের মনুষ্যত্বহীনতা বলেই মনে করেছে । তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভানেত্রী দোলা সেন বলেন, "এই সময়ে দাঁড়িয়ে এটা অকল্পনীয় অপরাধ ।"
বামপরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এই সিদ্ধান্তকে অমানবিক বলে উল্লেখ করেছেন । এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার মানবিক ভূমিকা নিলে ভালো হত ।" এই বিষয়টি অমানবিক বলে জানান CPI(M) নেতা মহম্মদ সেলিমও । তিনি বলেন, "অবিলম্বে ধার্য ভাড়া মকুব করে, বিনা ভাড়ায় তাঁদের ঘরে ফেরাতে হবে । রাজ্য সরকারের তরফেও বিশেষ ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে কোনও গড়িমসি করা চলবে না ।"