কলকাতা, 29 অক্টোবর : কোরোনা পরিস্থিতির মাঝেই নীল-সাদা রঙে সাজছে শহর। শহরজুড়ে নতুন করে পড়তে শুরু করেছে রঙের প্রলেপ। প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে এই খরচ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । যদিও সরকারের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের মন ভালো রাখার রসদ হল সৌন্দর্যায়ন।
আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি ও লকডাউনের জেরে রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয় । পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রের কাছে বকেয়া অর্থের দাবি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। যদিও আমফানের জন্য 1000 কোটি টাকার প্যাকেজ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার । তবুও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় ফের শহরে সৌন্দর্যায়নের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করছে রাজ্য সরকার। কয়েকজন এই পদক্ষেপকে সমর্থন করলেও এটা কাম্য নয় বলে মনে করছেন অনেকে। এই প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, "প্রতি বছর শহরকে সাজিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। রেলিং রং হয়। রাস্তার মাঝখানে ডিভাইডারগুলি রং করা হয় । এবারও শারদ উৎসব উপলক্ষ্যে সেই কাজটা করা হচ্ছে । সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীর চিকিৎসা করার পাশাপাশি মিউজ়িক থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। সেরকমই মানুষের মানসিক দিকটাও সুস্থ থাকা জরুরি। পরিবেশ যদি ভালো থাকে তাহলে মানুষ মানসিক দিক থেকে সুস্থ থাকে। মানুষের যে কোনও রোগকে দূরে সরানোর ক্ষেত্রে তা প্রয়োজন।"
কোরোনা পরিস্থিতিতে কলকাতার সৌন্দর্যায়ন, উঠছে প্রশ্ন
এই সৌন্দর্যায়নের কাজের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি ৷ এই নিয়ে BJP নেতা রাজু বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, চিকিৎসার অভাবে কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে মারা যাচ্ছে আর সরকার সৌন্দর্যায়নের বিলাসিতা দেখাচ্ছে ৷
তবে সরকারের এই উদ্য়োগ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে শহরবাসীর মধ্যে । বাপি মুখোপাধ্যায় নামে বালিগঞ্জের এক বাসিন্দা বলেন, "নীল-সাদা রং দেখতে ভালো লাগছে । আমাদের খুব একটা খারাপ মনে হচ্ছে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখতে ভালো লাগে। যতটুকু লোককে শান্তি দেওয়া যায়। সেটাই ভালো।" বিজয়নগরের বাসিন্দা সঞ্জীব মজুমদার বলেন, "নীল-সাদা রঙের পক্ষে নই। বিপক্ষে। কারণ প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে এই খরচ না করলেও হত । যা রং ছিল তা দিব্যি ভালো ছিল। এর উপরে নতুন করে আর রঙের পোচের দরকার ছিল না। সৌন্দর্যায়ন যা ছিল তা একেবারে কুৎসিত পর্যায়ে যায়নি। সৌন্দর্য তো ছিলই। আরও বেশি সৌন্দর্য এই সময় করা ঠিক নয়।" সোনারপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ পালের বক্তব্য, "পশ্চিমবঙ্গের একটা আলাদা রং হয়ে উঠেছে নীল-সাদা। যা থাকা প্রয়োজন। এখন বেশিরভাগ জায়গা ফাঁকা রয়েছে। কাজকর্ম বন্ধ আছে। এই সময়ে রঙের কাজ করে নেওয়া ভালো।"
তবে এই সৌন্দর্যায়নের কাজের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি ৷ এ নিয়ে BJP নেতা রাজু বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, চিকিৎসার অভাবে কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে মারা যাচ্ছে আর সরকার সৌন্দর্যায়নের বিলাসিতা দেখাচ্ছে ৷ এমনকী তিনি অভিযোগ করেন, মুখ্য়মন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কোরোনা পরিস্থিতিতে পাঁচ কিলো করে চাল দেওয়া হবে, কিন্তু রেশন থেকে মাত্র এক কিলো করে চাল পাচ্ছে গরিব মানুষ ৷