কলকাতা, 16 জানুয়ারি:নিয়োগের 5-6 বছর পরে সেই প্যানেল কীভাবে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বাতিল করতে পারে ? নিয়োগ দুর্নীতি মামলার এ দিনের শুনানিতে বারবার এই প্রশ্ন তুলে ধরলেন শাসকদলের সাংসদ নেতা তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । একই প্রশ্ন উঠে এল বর্ষীয়ান আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্রের সওয়ালেও ।
এ দিন শুনানিতে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "গাজিয়াবাদ থেকে কীভাবে মার্কশিট উদ্ধার হয়েছে সেটা শুধু সিবিআই জানে । ডিভিশন বেঞ্চের তা পরীক্ষা করে দেখা উচিত । প্যানেলের সময়সীমা এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর মামলা হচ্ছে । এবং সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি সেটা নিয়ে মামলা শুনছেন ? এতদিন মামলাকারীরা কোথায় ছিলেন ? নাইসার অফিস থেকে হার্ডডিস্ক পাওয়া গেল, কিন্তু কম্পিউটার পাওয়া গেল না ৷ এটা কী করে সম্ভব ? হাত-পা পাওয়া গেল কিন্তু দেহ পাওয়া গেল না, এটা সম্ভব ?"
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিচারপতি তখন জানতে চান, "আপনি কি এসএসসি-র ডেটাবেস নিয়ে সন্দেহ করছেন ?" জবাবে কল্যাণ জানান, "না, সিবিআইয়ের নথি এবং তথ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি ।"
অন্যদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায়, "আমাদের সার্ভারে যে নম্বর আগে থেকে ছিল, সেই অনুযায়ী আমরা নিয়োগপত্র দিয়েছি । কিন্তু সিবিআই গাজিয়াবাদের নথি দেওয়ার পরে আমরা আমাদের সার্ভার এবং গাজিয়াবাদের নথি খতিয়ে দেখে জানতে পারি যে, আমাদের সার্ভারে বেশি নম্বর দেখানো হয়েছে । তাই আমরা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়োগপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি ।"
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও প্রশ্ন, "কোনও একজন ব্যক্তির সন্দেহ হল আর তিন বছর পরে প্যানেল কোথায় জানতে চাইল সিঙ্গেল বেঞ্চ ? যে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, তাকে বাতিল করা যায় কীভাবে ? গাজিয়াবাদ থেকে যে হার্ডডিস্ক উদ্ধার হয়েছে, তার কম্পিউটার যদি উদ্ধার না হয় তাহলে তা প্রামাণ্য তথ্য হতে পরে না । তাও আবার উদ্ধার করা হয়েছে নাইসার প্রাক্তন কর্মী পঙ্কজ বনশালের গাজিয়াবদের বাড়ি থেকে । তিনি একজন ক্লার্ক ছিলেন । এই তদন্তের মানে কী ?"
আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র চাকরিরত প্রার্থী (পলাশ মণ্ডল)-এর পক্ষে বলেন, আবেদন জানালে ডিভিশন বেঞ্চ যাতে চাকরি বাতিলের বিষয়ে তাঁদের নিজেদের মতো পদ্ধতি অনুসরণ করেন চাকরিরত প্রার্থীদের জন্য । শুধুমাত্র গ্রুপ-ডি মামলার নির্দেশ, ডিভিশন বেঞ্চের কাছে হাজির করা হয়েছে । গ্রুপ-সির নির্দেশ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি । পাশাপাশি তিনি বলেন, "2017 সালে যে প্যানেল তৈরি হয়েছিল, হঠাৎ করে 6 বছর পরে নাইসার হার্ডডিস্কের অবতারণা হল এবং প্যানেল বাতিল ? এটা কি খেলা ?"
আরও পড়ুন:
- বিকাশ ভট্টাচার্য বনাম কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বাকযুদ্ধ আদালতে
- সুজিত-তাপসই শেষ নয়! ইডির আতসকাঁচের নীচে 14 বর্তমান ও প্রাক্তন পৌরপ্রধান
- প্রাথমিকে নিয়োগ প্যানেল নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি নির্দেশ খারিজ ডিভিশন বেঞ্চে