কলকাতা, 19 জানুয়ারি: সুযোগ এসেছিল কমপক্ষে তিন বার। কিন্তু কোনওবারই প্রধানমন্ত্রী হওয়া হয়নি। ঘরোয়া আলোচনায় এ কথা উঠলেই প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলতেন, "করার কিছু নেই। বাসটাই মিস করে গিয়েছি।" ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে না-পারলেও রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। আলঙ্কারিক পদ তাঁকে মানায় না ঠিকই, তবে বীরভূমের এই বঙ্গসন্তান এমন এক বিরল রাজনৈতিক চরিত্র যিনি সীমের মধ্যে অসীম। রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের কাছে তিনি ছিলেন 'অজাতশত্রু'। বাবা হিসেবে প্রণবকে কেমন দেখেছেন, তা নিয়ে বই লিখছেন কন্যা শর্মিষ্ঠা। নাম 'প্রণব মাই ফাদার: এ ডটার রিমেম্বার্স'। সেই বই ইতিমধ্যেই তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে।
এ নিয়ে ইটিভি ভারতের সঙ্গে টেলিফোনিক আলাপচারিতায় প্রণব-তনয়া তথা কংগ্রেস নেত্রী শর্মিষ্ঠা বলেন, "বাবা ও প্রধানমন্ত্রী মোদির রাজনৈতিক বিশ্বাস আলাদা। তবু দু'জনে একসঙ্গে কাজ করেছেন। আর তাই বাবাকে নিয়ে লেখা বই তাঁর হাতে তুলে দিতে পারে ভালোই লাগছে। আদর্শ গণতন্ত্রের চরিত্র এমনটাই হওয়া উচিত।" ঘটনাচক্রে 2014 সালে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করান এই বঙ্গসন্তানই। সেই থেকে আরও তিন বছর রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনার ভার সামলেছেন নরেন্দ্র মোদি ও প্রণব মুখোপাধ্যায়।
2017 সালে রাইসিনা হিলসের বাসিন্দা হিসেবে মেয়াদ শেষ করেন প্রণব। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিদের শিরোনামে আসার রীতি ভারতে নেই বললেই চলে। তবে তিনি ছিলেন আলাদা। 2018 সালের 7 জুন তাঁকে দেখা গেল আরএসএসের মঞ্চে। সরসঙ্ঘচালক মোহন ভগবতের পাশে বসেও অতিচেনা শাশ্বত ভারতের কথাই বলেছিলেন প্রণব। দিয়েছিলেন, গণতন্ত্রের পাঠও। এই অনুষ্ঠান নিয়ে বলতে গেলে শমির্ষ্ঠার কথা আলাদা করে আসবেই। দেশজুড়ে কংগ্রেস নেতারা চেয়েছিলেন আরএসএসের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিন প্রণব। তালিকায় যুক্ত হন মেয়ে শর্মিষ্ঠাও।