কলকাতা, 22 অগস্ট: যাদবপুরকাণ্ডে এবার হস্টেলের এক রাঁধুনিকে তলব করল কলকাতা পুলিশ । মঙ্গলবার যাদবপুর থানায় তাঁকে তলব করা হয়েছে । জানা গিয়েছে, তাঁর থেকে মূলত তদন্তকারীরা জানতে চাইবেন যে যাদবপুর হস্টেলে কারা কারা আসত ? মূলত হস্টেলের ভিতর রাতের অন্ধকারে কী হত? ঘটনার দিন ওই পড়ুয়ার সঙ্গে সঠিক কী হয়েছিল? এছাড়াও ওই ছাত্রকে যখন রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল তারপর রাতে সৌরভ চৌধুরী নেতৃত্বে যে সকল ছাত্ররা ছিল তারা মূলত কী করছিল? পাশাপাশি তদন্তকারীদের অনুমান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের রাঁধুনিরা এর আগেও এরকম অনেক ঘটনা দেখেছেন । ফলে তাঁদের বয়ান এই মামলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ ।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় 30 জনের বেশি সাক্ষীকে ডেকে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে । ঘটনার পর যাদবপুরের হস্টেলের রাঁধুনিরা মুখ খুলেছিলেন ৷ তাঁরা জানিয়েছিলেন, ছাত্রদের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে প্রায়শই ব়্যাগিং হত । এখানেই তদন্তকারীদের প্রশ্ন, হস্টেলের রাঁধুনি যদি ব়্যাগিং সম্পর্কে ওয়াকিবহল থাকে তাহলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কেন ওয়াকিবহাল ছিল না?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট 13 জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ । ধৃত 13 জনের মধ্যে অধিকাংশই প্রাক্তন পড়ুয়া । লালবাজার সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ধৃতদের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা । তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে । এখন ধৃতদের একে অন্য ছাত্রদের সঙ্গে বয়ান মিলিয়ে দেখছে পুলিশ আধিকারিকরা ।
আরও পড়ুন:যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুতে হস্টেলের আধিকারিক ও ডিন অফ স্টুডেন্টকে তলব লালবাজারের
গত 9 আগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল হস্টেলের তিনতলার নীচ থেকে প্রথম বর্ষের বাংলা অনার্সের ছাত্রের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় । যদিও ওই পড়ুয়াকে উপর থেকে কেউ ঠেলে ফেলেছে নাকি সে নিজেই ঝাঁপ দিয়েছে, সেই বিষয়টি এখনও তদন্ত সাপেক্ষ । পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, এরপরই দ্রুত সৌরভ চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল ছাত্র একটি ট্যাক্সি করে ওই পড়ুয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় যাদবপুরে কেপিসি হাসপাতালে নিয়ে যান । তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের একটি নির্জন মাঠে সৌরভের নেতৃত্বেই চারবার বসেছিল জেনারেল বডি মিটিং । সেখানেই বলা হয়েছিল, এই ঘটনায় যদি পুলিশ আসে তাহলে ছাত্রদের পুলিশকে কী কী বয়ান দিতে হবে । এরপরই ভোররাতে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের । পরিবারের তরফে খুনের মামলা এবং ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ করা হয় । ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ ৷