কলকাতা, 7 মে : অভিযোগ ছিল অপহরণের চেষ্টার। ঘটনার দিন যুবতি জানিয়েছিলেন, রাস্তায় হঠাৎই একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে টেনে তোলার চেষ্টা করে। বাধা দিতে গেলে শ্বশুরকে চাপা দিয়ে চলে যায় ওই অ্যাম্বুলেন্স । পরে মৃত্যু হয় শ্বশুরের। কিন্তু ঘটনার তদন্তে নেমে উঠে এল নতুন তথ্য। আজ চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স চালক এবং তার সহকারীর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যুবতি অপহরণের চেষ্টার বিষয়টি প্রতিষ্ঠা পায়নি ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ঘটনা । যুবতি সেই সময় বলেছিলেন, "রাত 11টা 45 নাগাদ আমি শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদের সঙ্গে বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরছিলাম। পূর্বাচল প্রগতি সংঘে বিয়েবাড়ি ছিল। শ্রী ব্যাঙ্কোয়েটের সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্স হঠাৎই আমাদের পথ আটকে দাঁড়ায়। তারপর আমার হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে। চেষ্টা করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নেওয়ার। তখন আমার শ্বশুর বাধা দিতে যান। দুষ্কৃতীরা তখন আমাকে ছেড়ে দিয়ে শ্বশুরের উপর দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে দেয়। আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।" এই মর্মে ট্যাংরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবতি। ESD ডিভিশন থেকে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করে ।
কিন্তু পরে যুবতির বক্তব্যে অসঙ্গতি পায় পুলিশ। CCTV ফুটেজেও অপহরণের চেষ্টার বিষয়টি প্রতিষ্ঠা পায়নি। সেই সূত্রেই অপহরণের ধারা সেই সময় প্রয়োগ করা হয়নি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকার বাসিন্দারা। রাস্তায় জলের ড্রাম ফেলে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, অপহরণের চেষ্টা এবং শ্লীলতাহানির ধারা যদি মামলায় যোগ না করা হয়, তবে অবরোধ চালিয়ে যাওয়া হবে। এর জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ট্যাংরার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গোবিন্দ খটিক রোড।
CCTV ফুটেজ় খতিয়ে দেখে চিহ্নিত করা হয় অ্যাম্বুলেন্সটি। তার নম্বর WB 19G 9621। অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচ্ছিল শেখ আবদুর রহমান। বয়স 26 বছর। সে মহেশতলা থানা এলাকার দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে। জেরায় গোপাল প্রামাণিকের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে সে। পুলিশকে জানিয়েছে, এন্টালির চায়না টাউন থেকে SSKM-র দিকে যাচ্ছিল সে। ইতিমধ্যে বিদ্যাসাগর হাসপাতাল থেকে ডাক পড়ে । দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স চালাতে গিয়েই গোপাল প্রামাণিককে ধাক্কা মারে আবদুর । তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য অভিযুক্তের খোঁজ পায় পুলিশ। নাম তাজউদ্দিন। বয়স কুড়ি বছর। ওই দুজন এই মুহূর্তে জেল হেপাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে 39 জন সাক্ষী জোগাড় করেছে পুলিশ।