কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর: রাজ্য পুলিশের কনস্টেবলের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি ও আয় বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগ ৷ এই অভিযোগে মনোজিৎ বাগীশ নামে ওই কনস্টেবলকে শনিবার গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, তাঁকে বীরভূমের বোলপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় । তিনি একাধিক জেলায় কর্মরত ছিলেন । বর্তমানে তিনি বোলপুর থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন । ওই কনস্টেবল এর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি । বিলাসবহুল গাড়ি-সহ কয়েক কোটি টাকা ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতি থেকে শুরু করে আয়ের বহির্ভূত সম্পত্তি থাকায় বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই গোয়েন্দাদের স্ক্যানারে ছিলেন ওই কনস্টেবল । এরপর ওই কনস্টেবলের মাসিক বেতন পরীক্ষা করে হিসাব করা হয় । দেখা যায়, 2012 সালের 1 জানুয়ারি থেকে 2015 সালের 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই কনস্টেবলের মোট আয় হওয়ার কথা 10 লক্ষ 23 হাজার টাকা । কিন্তু তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ এর থেকে বেশি রয়েছে ৷
এই বিপুল সম্পত্তি খবর মেলার পরে গত বছর খাতায়-কলমে তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা । তদন্তে নেমে তাঁরা জানতে পারেন যে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল 43 লক্ষ 60 হাজার 604 টাকা । হাওড়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর কয়েকটি অ্যাকাউন্টের হদিশ মেলে । প্রশ্ন উঠছে, হাওড়া জেলায় বিভিন্ন ব্যাংকে তাঁর অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলল কেন ?
এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘এই দুর্নীতির বীজ বপন হয়েছে প্রায় 2010 সাল থেকে । বর্তমানে ওই কনস্টেবল বীরভূমের বোলপুর থানায় কর্মরত অবস্থায় থাকলেও অতীতে ওই কনস্টেবল হাওড়া-সহ একাধিক জেলায় কাজ করেছেন । বিভিন্ন জেলায় তাঁর ব্যাংক অ্য়াকাউন্ট থেকে বিভিন্ন সম্পত্তির হদিশ ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে ।’’
তবে একজন পুলিশ কনস্টেবলের পক্ষে এত বড় আর্থিক দুর্নীতি একা করা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা । নেপথ্যে আসলে কে রয়েছেন, তা জানতে মনোজিৎকে আরও জেরা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা ৷
যদিও একজন কনস্টেবলের কাছে আয় বহির্ভূত সম্পত্তি রাখার অভিযোগ এই প্রথম নয় । একসময় বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের কাছ থেকেও উদ্ধার হয়েছিল কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি । শুধুমাত্র বীরভূম বা অন্যান্য জেলায় নয়, বরং অনুব্রত মণ্ডলের ওই দেহরক্ষীর প্রায় একশো কোটি টাকার সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছিল কলকাতায় । বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের ওই প্রাক্তন দেহরক্ষী । তিনিও এক সময় ছিলেন রাজ্য পুলিশের একজন কনস্টেবল ।
আরও পড়ুন:অনুব্রতর দেহরক্ষীর সম্পদে চক্ষু চড়কগাছ গোয়েন্দাদের! ডায়েরিতে মিলল প্রভাবশালীদের নাম
আর প্রায় ওই একই অভিযোগে সদ্য রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে ধরা পড়া ওই একই জেলার কনস্টেবল মণোজিৎ বাগীশ কি আরও একজন সায়গল হোসেন, উঠছে প্রশ্ন ৷