কলকাতা, 16 এপ্রিল : লকডাউনের মধ্যেই প্লেসমন্ট চলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে । অনলাইনে হচ্ছে চাকরির ইন্টারভিউ। গত বছরের সাড়ে 42 লাখের রেকর্ড ভেঙে এবছর সর্বোচ্চ 58 লাখ টাকার প্যাকেজের চাকরি পেয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের এক পড়ুয়া । 50 লাখের উপর বার্ষিক প্যাকেজ পেয়েছেন মোট চারজন। তবে এখনও পর্যন্ত ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ সম্পূর্ণ হয়নি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গতবছর 40 লাখের উপর পেয়েছিলেন মোট 11 জন। 30-40 লাখের মধ্যে বার্ষিক প্যাকেজ পেয়েছিলেন 28 জন পড়ুয়া। গতবছর প্লেসমেন্ট ভালো হলেও এবছর গুণগত দিক থেকে ভালো প্লেসমেন্ট পাচ্ছেন পড়ুয়ারা। এমনই জানালেন যাদবপুরের প্লেসমেন্ট অফিসার শমিতা ভট্টাচার্যের। তিনি বলেন, "এবছর সর্বোচ্চ 58 লাখের বার্ষিক প্যাকেজ পেয়েছেন এক পড়ুয়া । 50 লাখের উপর মোট চারটে অফার আছে। 52 লাখের দুটো, সাড়ে 51 লাখের একটি ও সর্বোচ্চ ৫৮ লাখের প্যাকেজ একটি। 30-50 লাখের মধ্যে বার্ষিক প্যাকেজ পেয়েছেন 18 জন। তবে, এবছরের প্লেসমেন্ট গতবছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। এবছর চাকরির বাজার খুব একটা ভালো না । সেখানে আমি জোর গলায় বলতে পারি, সংখ্যা এবং প্লেসমেন্টের গুণগত মানের দিক থেকে আমরা গতবছরের থেকে ভালো করেছি।"
গুগল থেকে ৫৮ লাখের বার্ষিক প্যাকেজের চাকরির অফার পেয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের পড়ুয়া অরিত্র সেন। ৫০ লাখের উপর প্যাকেজ পাওয়া তিনজনের মধ্যে দু'জন কম্পিউটার সায়েন্স ও একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের। সাধারণত, কম্পিউটার সায়েন্স ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ থেকেই সবথেকে বেশি প্যাকেজের চাকরি পেয়ে থাকেন পড়ুয়ারা। এবছর ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকেও একজন রয়েছেন। 30-50 লাখ বার্ষিক প্যাকেজ পাওয়া 18 জনের মধ্যে যেমন কম্পিউটার সায়েন্স, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ থেকে আছে তেমনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনস্ট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়ারাও আছে। শমিতা ভট্টাচার্য বলেন, "সাধারণত প্রতিবছরই কম্পিউটার সায়েন্স, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে ভালো প্লেসমেন্ট হয়। এবার ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্সট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং খুব ভালো করেছে। এছাড়া, মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও ভালো প্লেসমেন্ট হয়েছে। ফার্মেসিও ভালো করেছে।"
আর্টস ও সায়েন্স ফ্যাকাল্টির প্লেসমেন্টের বিষয়ে শমিতা ভট্টাচার্য বলেন, "সায়েন্স, আর্টসের বেশিরভাগ পড়ুয়াই গবেষণা বা উচ্চশিক্ষার জন্য চলে যায়। আর্টস আর সায়েন্সের সেটাই টেন্ডেন্সি। তবে, যে সমস্ত বিভাগের পড়ুয়ারা আগ্রহী সেই বিভাগগুলির ভালো প্লেসমেন্ট হয়েছে। যেমন সায়েন্সের জিওলজিক্যাল বিভাগ । আর্টসের ইকোনমিকস বিভাগের 80 শতাংশের উপর প্লেসমেন্ট হয়েছে। প্রত্যেকেরই প্রায় 10 লাখের উপর প্যাকেজ।"
প্রতি বছর অগাস্ট মাসে থেকে শুরু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়া। ধাপে ধাপে চলে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। এবার প্লেসমেন্টের জন্য রেজিস্টার করা পড়ুয়াদের মধ্যে প্রায় 84 শতাংশ পড়ুয়া চাকরি পেয়েছে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ দিয়ে। এখনও একশোর বেশি প্লেসমেন্ট বাকি রয়েছে। কিন্তু, তারমাঝেই কোরোনা সংক্রমণের জেরে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠান। লকডাউন শুরু হয় । তবে, লকডাউনের জন্য প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়া থমকে নেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শমিতা ভট্টাচার্য বলেন, "মার্চ-এপ্রিলে যেগুলি ছিল সেগুলি আমরা অনলাইন ইন্টারভিউ করালাম। প্রায় সবকটাই হয়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই অনলাইন ইন্টারভিউ হচ্ছে। আপাতত ঠিকঠাকই আছে। ভবিষ্যৎ বলবে কী পরিস্থিতি হবে। অনেক কম্পানির সঙ্গে কথা হয়ে গেছে। তাঁরা হয় লকডাউনের পর বা লকডাউন বেশিদিন চললে তারমাঝেই অনলাইনে ইন্টারভিউ নেবে।"