সাগর মেলায় শিবিরে হাজির ভিন রাজ্যবাসীরা, শেয়ার করলেন তাঁদের অনুভূতি কলকাতা, 10 জানুয়ারি: এ যেন এক মিনি গঙ্গাসাগর (Gangasagar Mela 2023) । শীতের দুপুরে একটি শিবিরের সামনে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্যই অবাক হয়ে দেখছিলেন জমা 5-8 জন। প্রত্যেকের মাথায় টুপি। তাঁরা এবার প্রথম গঙ্গাসাগর যাত্রী। এসেছেন প্রতিবেশী দেশ নেপাল থেকে (Pilgrims Coming to Gathering)। তাঁদের নাম শানু বিষ্টা, অম্বিকা বিষ্টা ৷ এই শিবিরে এসে জানালেন তাঁদের অনুভূতির কথা।
বেশ কয়েকদিন আগে নেপাল থেকে সড়ক পথে ভারতে আসা তাঁদের। তিনটি বাস করে প্রায় 140-150 জন এসেছেন। লক্ষ্য মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরের পুণ্য স্নান করে কপিলমুনি আশ্রমে (Kapil Muni Ashram, Gangasagar) পুজো দেওয়া ৷ সেই পুণ্য লাভ করতেই হিমালয়ের কোল থেকে একদম সাগরের বুকে নেমে আসা তাঁদের। প্রথমবার এসে কলকাতার যে অস্থায়ী শিবিরে তাঁরা থাকছেন সেখানকার খাওয়া-দাওয়া, পানীয় জল, স্নান, শৌচালয় এত সুন্দর তা তাঁদেরকে অভিভূত করেছে। তাই ধন্যবাদ জানালেন সরকারকে ও আয়োজকদের।
এক পুণার্থী অম্বিকা বিষ্টা বলেন, "শুনেছি সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার। তাই আমরা বেশ কয়েক বছর আগেই ঠিক করেছিলাম আসব বলে ৷ এবার শেষমেশ সেই ইচ্ছেপূরণ হতে চলেছে ।" একইভাবে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও হরিয়ানার একাধিক মানুষও এসেছেন। কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, কেউ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে। আবার কারও ছেলেমেয়ে তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা'কে এনেছেন পুণ্য লাভের ইচ্ছায়। আরও এক পুণ্যার্থীর কথায়, 10 বছর ধরে আসছি। বিভিন্ন রাজ্যে এমন তীর্থ করতে গিয়ে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তবে এরাজ্যে গঙ্গাসাগরে এলে কখনোই নিরাপত্তার অভাবে ভুগতে হয় না ৷ কোথায় থাকব, কোথায় খাবো, কোথায় মাথা গুঁজবো, তার চিন্তা করতে হয় না। ফলে যতদিন শরীর টানবে ততদিনই গঙ্গাসাগরে আসব।"
বুঘাটের গঙ্গাসাগরে অস্থায়ী শিবির সারসার দিয়ে দু'দিকে বসে সাধু-সন্তরা আরও পড়ুন:দ্বিগুণ পুণ্য, গঙ্গাসাগরে এবার বাংলার 5 পুণ্যভূমি দর্শনের সুযোগ
কয়েকদিন পর মকর সংক্রান্তি। সেদিনই পুরো ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গঙ্গাসাগরের আসা লাখে লাখে ভক্তরা স্নান সেরে পুজো অর্চনায় রত হবেন। আর তার আগেই জমজমাট কলকাতার বাবুঘাটের গঙ্গাসাগরে অস্থায়ী শিবির সারসার দিয়ে দু'দিকে বসে সাধু-সন্তরা। একদিকে একের পর এক চলছে লঙ্গরখানা। রয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের তত্ত্বাবধানে পানীয় জলের ব্যবস্থা। রয়েছে কলকাতা কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে আলো থেকে শুরু করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা। আছে অ্যাম্বুলেন্সও। করোনার কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা করা হয়েছে কোভিড টেস্ট সেন্টার। সব মিলিয়ে বছর শুরুতে শীতের আমেজে গঙ্গাসাগর শিবির একেবারে জমজমাট।