কলকাতা, 8 এপ্রিল : কখনও স্কুল বাসের মধ্যে পড়ুয়াকে যৌননিগ্রহ আবার কখনও স্কুল ক্যাম্পাসের ভিতরে । এমনই নানা অভিযোগে বিদ্ধ জিডি বিড়লা স্কুল এবার বেতন বাড়ানোর জেরে একেবারে বন্ধই করে দেওয়া হল । এভাবে রাতারাতি স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যপক চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা ৷ পড়ুয়ারা অনিশ্চিত বোধ করছেন ৷ অন্যদিকে মুখে কুলুপ এঁটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন (GD Birla School)।
মুনমুন বিশ্বাস নামে এক অভিভাবকের কথায়, "আমার মেয়ে এবার বোর্ডের পরীক্ষা দেবে ৷ এখনও ওদের সিলেবাস শেষ হয়নি । তার মধ্যে এভাবে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হল । আমরা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি । স্কুলের বিরুদ্ধে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই । স্কুল আমাদের সঙ্গে সবসময় সহযোগিতা করেছে । শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় কিছু অভিভাবক মিলে এই অশান্তির সৃষ্টি করেছেন । আর এদের মদত দিচ্ছে বাইরের কিছু লোকজন । এর আগে আমরাও স্কুলের ফিজ কমানোর জন্য লড়াই করেছিলাম কিন্তু স্কুলের পঠনপাঠন তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ।"
আরও এক অভিভাবক শম্পা মালাকার বলেন, "এমন কিছু অভিভাবক রয়েছেন যাদের কাছ থেকে দু'বছরের ফি মুকুব করেছে স্কুল । অভিভাবকদের সমস্যা থাকতেই পারে কিন্তু সেটা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া প্রয়োজন । তাছাড়া আমরা তো জেনে শুনেই আমাদের সন্তানদের এই স্কুলে ভর্তি করিয়েছি যে, এই স্কুলের ফিজ স্ট্রাকচার এইরকম ৷ এখন আমরা যদি বলি ফি দেব না, তাহলে তো হয় না ।"
আরও পড়ুন :আজ দুপুরেই সিবিআই দফতরে শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে জেরার নির্দেশ হাইকোর্টের
অভিযোগ, এই স্কুল বিভিন্ন সময় নানা কারণ দেখিয়ে নানা খাতে স্কুলের ফি বাড়িয়েছে ৷ প্রতিবছর 10 শতাংশ করে বারে স্কুলের ফিজ । আর এই বিষয় নিয়েই মতপার্থক্য রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। এদের একাংশ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ ও হন। এরপর কোর্ট রায় দেয় যে 80 শতাংশ মাইনে দেওয়ার নির্দেশ দেয় । অভিভাবক রঞ্জন সিংহ বলেন, "আমি এইসব সমস্যা নিয়ে তেমন কিছুই জানি না ৷ কারণ আমি ব্র্যান্ড দেখে আমার মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছিলাম । দু'দিন মাত্র ও স্কুলে যেতে পেরেছে ।"
জিডিবিড়লার স্কুল রাতারাতি বন্ধ বয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকরা অভিভাবক মৌমিতা চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, "মোট 300 জনের মত অভিবভাবক আদালতের দ্বারস্থ হয় তবে এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন স্কুলের চাপে পড়েই পরে 100 শতাংশ ফি মিটিয়ে দেয়। এবার সেই দিন যে 100জন বাচ্চাকে আটকানো হয়েছিল তাদের মধ্যে মূলত ছিল সেইসব পড়ুয়ারা যাদের বাবা ও মায়েরা আদালতের নির্দেশ মত 80% ফি দিয়েছিলেন। এরপর আমরা আবার আদালতের দ্বারস্থ হই। আদালতের স্পেশাল বেঞ্চ রায় দেন যে রাইট টু এডুকেশন এর আওতায় থেকে স্কুল কোনও বাচ্চাকে তার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করতে পারে না তাই পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে দিতে হবে এই নির্দেশের পর, রাতারাতি স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ।"
আরও পড়ুন :গ্রুপ-ডি নিয়োগে বেনিয়ম, সিবিআই-কে খতিয়ে দেখার নির্দেশ হাইকোর্টের
পাশাপাশি আরও কিছু গরমিলের কথা সামনে উঠে এসেছে । যেমন বেশ কয়েক মাস ধরে স্কুলের ওয়েবসাইটটি খোলা যাচ্ছে না । পুরোনো ইমেল পরিবর্তন করে তার জায়গায় নতুন ইমেল ব্যবহার করতে বলা হয়েছে । অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অভিভাবকদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না । কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এই বিষয় কোনও মন্তব্য করতে বা কবে স্কুল আবার খুলবে সেসব জানাতে চায়নি ।