কলকাতা, 19 জুন : কোরোনা ভাইরাসের কারণে চলা দীর্ঘদিনের লকডাউনে অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন সবস্তরের মানুষই । এই সময়ে তাঁরা চাইছেন একটু অব্যাহতি । জুন মাসের প্রথম দিন থেকেই একের পর এক বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য সব খাতের ফি মকুবের দাবিতে সরব হয়েছেন । আজও ব্যতিক্রম নয় । এদিন কলকাতার দিকে দিকে একাধিক বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখালেন । সকালে জোকার একটি বেসরকারি স্কুলের পর টালিগঞ্জের এক বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা স্কুলের সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখান । আবার সল্টলেকেও একটি বেসরকারি স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা । দাবি সকলের একই । তাঁদের থেকে শুধুমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক ।
আজ দুপুরে সল্টলেকের বেসরকারি স্কুলের সামনে জমায়েত করেন শতাধিক অভিভাবক । তাঁরা নিজেদের দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একটি মিছিলও করেন । নিজেদের দাবি নিয়ে বিক্ষোভে সামিল এক অভিভাবক মলয় বোস বলেন,"আমাদের সবার অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ । আমাদের ফি-এর বিষয়টা যেন স্কুল বিবেচনা করে সেটাই আমাদের দাবি । স্কুলের সঙ্গে যখন কথা বলছি তখন স্কুলে লোকেরা বলছে তাঁরা ফি কমাতে পারবে না । কারণ, শিক্ষকদের মাইনে দিতে হবে । তাহলে কি যে পুরো ফি কাঠামোটা আছে সেটা শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার জন্যই? তাহলে এতদিন যে বিভিন্ন খাতে স্কুল ফি নিত সেটা মিথ্যে? এটা একটা প্রতারণা ছাড়া কী? তাহলে আমাদের যে ব্রেক-আপটা দেওয়া হয় সেটা কেন দেওয়া হয়? আমরা চাইছি শুধুমাত্র যেটা টিউশন ফি শুধুমাত্র সেটাই আমাদের থেকে নেওয়া হোক । যেটা টিউশন ফি নয়, এখন ব্যবহার হচ্ছে না, যেমন, ডেভলপমেন্ট, কম্পিউটার, স্পোর্টস, ট্রান্সপোর্ট কিছুই ব্যবহার হচ্ছে না । সেই ফি কেন নেওয়া হবে? আমাদের দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষের আলোচনায় বসতে চাই । এই বছর আমাদের সমস্যা । পরের বছর যদি স্কুল ডেভলপমেন্টের জন্য টাকা চাই তাহলে আমরা চাঁদা তুলে অতিরিক্ত টাকা দেব । এই বছরটা তো রেয়াত করা হোক।"
নিজেদের দাবি নিয়ে অভিভাবকরা প্ল্যাকার্ড হাতে স্কুলের সামনে জমায়েত করে স্লোগান দিতে থাকেন । তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবি জানান । কিন্তু, অভিভাবকদের বহু অনুরোধ, আবেদন সত্ত্বেও প্রথমে স্কুল কর্তৃপক্ষ দরজা খোলেননি । তারপরে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে স্কুলের তরফ থেকে খবর দেওয়া হয় বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশকে । পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় স্কুলের দরজা খুলে দেওয়া হয় । কিন্তু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছেন অভিভাবকরা । তাঁরা জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ আগামী সোমবার গভর্নিং বডির বৈঠক করবে এবং যাদের সত্যি টিউশন ফি দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাদের সেল্ফ ডিক্লারেশন দিতে হবে বলেও বলা হয়েছে স্কুলের তরফে ।