বেঙ্গালুরু, 18 জুলাই: চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে বিরোধী শিবিরের মেগা বৈঠকের আজ দ্বিতীয় দিন ৷ এর আগে পটনায় এই জোটের প্রথম বৈঠক হয়েছিল 23 জুন ৷ সেখানে আঞ্চলিক ও জাতীয় দল মিলিয়ে 16টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল ৷ আজ বেঙ্গালুরুতে একসঙ্গে বৈঠকে বসবে 26টি রাজনৈতিক দল ৷ গতকাল বেঙ্গালুরুতে বিরোধী শিবিরের বৈঠকের প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান নেতা শরদ পাওয়ার ৷ মঙ্গলবার সকাল সকাল এনসিপি প্রধান ও তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে মহারাষ্ট্র থেকে বেঙ্গালুরুর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন ৷
গতকাল সন্ধ্যায় বিরোধী শিবিরের বৈঠকে কমন মিনিমাম প্রোগ্রামের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় ৷ এছাড়া এই জোটের নাম কী হবে তাও উঠে আসে আলোচনায় ৷ বিরোধী রাজনৈতিক দলের একাংশের মধ্যে ইউপিএ নাম নিয়ে আপত্তি রয়েছে ৷ তাই মঙ্গলের বৈঠকে বিরোধীদের এই জোটের নতুন নাম নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই বিরোধী জোটের নাম প্যাট্রিওটিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স হতে পারে ৷ এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আজ, 18 জুলাই ৷
আরও পড়ুন: বৈঠকে সোনিয়ার পাশে মমতা, দুই নেত্রীর সমীকরণে কী বার্তা?
গতকাল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকায় দেখা গিয়েছে ৷ তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বিজেপিকে হারাতে হলে ব্যক্তিগত বিভেদ দূরে সরিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের প্রয়োজন ৷ তাঁর বিশ্বাস, বিরোধীরা যেভাবে এক ছাতার তলায় আসছে, তাতে বিজেপি পরাস্ত হবেই ৷ বিরোধী দলগুলির মুখ বন্ধ করতে বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ সরকার এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে, তা বন্ধ করা প্রয়োজন ৷
অ-বিজেপি দল শাসিত রাজ্যগুলিকে শায়েস্তা করতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ব্যবহার, কখনও রাজ্যপালকে দিয়ে সমান্তরাল শাসন, আবার কোথাও রাজ্যের বরাদ্দ বন্ধ করে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরির চেষ্টা- এই সব প্রসঙ্গই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্থাপন করেছেন ৷ তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই জোট শুধুমাত্র নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রস্তুতি নয়, বিরোধী রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের পক্ষপাতদুষ্ট পদক্ষেপেরও সম্মিলিত প্রতিবাদের জন্য জরুরি ।
সামগ্রিকভাবে বিরোধী জোটের রূপরেখা তৈরির ক্ষেত্রে আজকের দিনটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷ বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলের বৈঠকে সংবিধান ও দেশ বাঁচানো বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে ৷ তাতে থাকবে ইতিহাসের পাঠ্যসূচি বদল, সিলেবাস বদল ও ইডি-সিবিআইয়ের সক্রিয়তার মতো বিষয়গুলি ৷
আরও পড়ুন: 'বিরোধী ঐক্যে বিচলিত বিজেপি', এনডিএ বৈঠককে গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেস
উল্লেখ্য, সোমবার বেঙ্গালুরুর বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি, জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধি ও কংগ্রেসের অন্য শীর্ষ নেতারা ৷ পাশাপাশি বেঙ্গালুরু পৌঁছন বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় ৷ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, ছিলেন তাঁর বাবা তথা আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব ৷ এছাড়া দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবান্ত মান, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ৷