কলকাতা, 9 এপ্রিল : লকডাউনের জেরে গৃহবন্দী মানুষ । সমস্ত পরিষেবা বন্ধ । সাধারণ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের রুজি-রোজগার নেই । ধুঁকছে অর্থনীতি । এই কঠিন পরিস্থিতিতে সরকারের যথাযথ সিদ্ধান্তই মানুষকে পথ দেখাতে পারে । এমনই মনে করছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত ।
তিনি বলেন, "মানুষের জন্য শুধু খাদ্যশস্য যথেষ্ট নয়। সংসারের অন্য জিনিস কিনতেও অর্থের দরকার রয়েছে । সেই অর্থের জোগানের জন্য নানা পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে । কাজে লাগাতে সাধারণ মানুষকে । সরকারের সিদ্ধান্তই এই কঠিন সময়ে মানুষকে পথ দেখাতে পারে।"
অসীম দাশগুপ্তের পরামর্শ, "অবিলম্বে 100 দিনের কাজ বাড়িয়ে 150 দিন করা উচিত । বিশেষ করে গ্রামের ক্ষেত্রে। 100 দিনের কাজের জন্য 60 হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ । আরও যদি 30 হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি করা যায় তাহলে গ্রামাঞ্চলের মানুষের সুবিধা হবে । গ্রামাঞ্চলের সঙ্গে শহরেও নিকাশি এবং রাস্তার সংস্কারের জন্য কিছু মানুষকে নিয়োগ করতে হবে। যে কাজ বামফ্রন্ট সরকার তার শেষ অর্থবর্ষে করেছিল। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা উপকৃত হয়েছিল এবং সরকারও পরিষেবার দিক থেকে উপকৃত হয়েছিল । ন্যূনতম 6 মাসের জন্য এই কাজ শুরু করা উচিত সরকারের। অর্থের প্রয়োজন প্রায় কুড়ি হাজার কোটি।
অসীম দাশগুপ্ত বলেন, "ছোট উদ্যোগীদেরও কাজে লাগাতে হবে । কারণ তাদের অবস্থাও শোচনীয়। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার পরও মেরুদণ্ড সোজা করে ব্যবসা করতে পারছে না তারা। সমগ্র বিষয়টি বাস্তবে রূপায়ণ করতে 1 লাখ 45 হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।"
অসীমবাবু আরও বলেন, "বড় বড় কর্পোরেটদের ইতিমধ্যেই কর ছাড় বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা সরকার দান করেছে। মানুষের অর্থ এভাবে বিলিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না । বাড়তি কর ছাড়ের দরকার নেই। অবিলম্বে দেশের সরকারের উচিত কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে দেওয়া ছাড় প্রত্যাহার করা।"
কোরোনা ভাইরাসের ওষুধ নিয়ে আশাবাদী প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "কালাজ্বরের ওষুধ তৈরি করেছিলেন ইউ এন ব্রহ্মচারী। তখনও মানুষের মধ্যে ভয়ঙ্কর আতঙ্ক ছিল কীভাবে কালাজ্বর থেকে উদ্ধার পাওয়া যাবে। ইউ এন ব্রহ্মচারী ওষুধ তৈরি করে মানুষকে দিশা দেখিয়েছিলেন। সেই ওষুধও বেঙ্গল কেমিকেলের সঙ্গে যুক্ত। সেই কারখানাকে দেশের সরকার বন্ধ করতে চাইছে। ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রেও আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বেঙ্গল কেমিকেল থেকেই তার পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। পরিতাপের বিষয় অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ধমকের সুরে ভারত থেকে ওষুধ চাইছেন কোরোনা ভাইরাসের। সৌজন্য সহকারে ওষুধ চাওয়া উচিত ছিল। মৌলিক গবেষণায় ওষুধ বানানো যায়। তবে নতুন নতুন উদ্যোগের জন্য সবসময় সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ব্যক্তির পাশে সরকারের থাকা উচিত ।"