পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

কমেছে হাসপাতালে যাওয়ার প্রবণতা, অনলাইন কনসালটেন্সিতে মজে চিকিৎসক-রোগী - অনলাইন মেডিকেল কনসালটেন্সি

প্রাইভেট ক্লিনিকগুলো থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল সব জায়গায় ভিড় দেখা যেত রোগী ও তার পরিবারের ৷ কিন্তু কোরোনার সংক্রমণের ভয়ে এখন কেউই হাসপাতালে আসতে সাহস পাচ্ছেন না ৷ বর্তমান কোরোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে চিকিৎসক ও রোগী দু'পক্ষই বেছে নিয়েছেন এই অনলাইনে মেডিকেল কনসালটেন্সিকে ৷

Online Medical Contultancy
অনলাইন মেডিকেল কনসালটেন্সি

By

Published : Jul 24, 2020, 3:26 AM IST

কলকাতা, 22 জুলাই : জ্বর হোক বা কাশি ৷ হার্টের সমস্যা হোক বা অন্য কোনও শারীরিক অসুস্থতা ৷ সমাধান পেতে সকলেই চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন ৷ তাই প্রাইভেট ক্লিনিকগুলো থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল সব জায়গায় ভিড় দেখা যেত রোগী ও তার পরিবারের ৷ কিন্তু কোরোনার সংক্রমণের ভয়ে এখন কেউই হাসপাতালে আসতে সাহস পাচ্ছেন না ৷ ফলে আগের মতো আর রোগীদের ভিড় নেই হাসপাতালগুলিতে ৷

এক বেসরকারি হাসপাতালের জনসংযোগ আধিকারিক জানান, তাদের তিনটি বিভাগ মিলিয়ে লকডাউনের আগে আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় 1 হাজার রোগী আসতেন ৷ বর্তমান কোরোনা পরিস্থিতিতে সেই সংখ্যাটা এখন 200-রও কম ৷ তবে, হাসপাতালে না এসে কীভাবে নিজেদের চিকিৎসা করাচ্ছেন রোগীরা ? উত্তর অনলাইন মেডিকেল কনসালটেন্সি ৷

বর্তমান কোরোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে চিকিৎসক ও রোগী দু'পক্ষই বেছে নিয়েছেন এই অনলাইনে মেডিকেল কনসালটেন্সির পথকে ৷ ফলে ভিডিয়ো কলের সাহায্যে একদিকে যেমন রোগী তার শারীরিক সমস্যাগুলি চিকিৎসককে জানাতে পারছেন ৷ তেমনই রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা করতেও সক্ষম হচ্ছেন চিকিৎসকরা ৷ ফলে বেড়েছে অনলাইন কনসালটেন্সির চাহিদা ৷

এক বেসরকারি হাসপাতালের জনসংযোগ আধিকারিক জানান, লকডাউনের আগে অনলাইনে মেডিকেল কনসালটেন্সির চাহিদা ছিল 2 শতাংশ ৷ লকডাউন চলাকালীন অনলাইন কনসালটেন্সির চাহিদা বেড়ে হয় প্রায় 80 শতাংশ ৷ আনলক পর্যায়ে অনলাইন কনসালটেন্সির সুবিধা নিয়েছেন 60 শতাংশ রোগী ৷

কোরোনা আতঙ্কে বেড়েছে অনলাইন মেডিকেল কনসালটেন্সির চাহিদা

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সমস্তরকম রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেই কী ব্যবহারযোগ্য এই অনলাইন কনসালটেন্সি ?

ত্বক বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ী বলেন, "ত্বকের চিকিৎসা বা ডার্মাটোলজিতে আমাদের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে চোখ ৷ তাই 80 শতাংশ ক্ষেত্রে একজন ত্বক বিশেষজ্ঞ দেখেই রোগ ধরতে বা চিনতে পারেন । যদিও কিছু ক্ষেত্রে বায়োপসি করার প্রয়োজন পড়ে ৷ সেক্ষেত্রে হাসপাতালে আসতে হয় ৷ কিন্তু সেই সংখ্যাটা মাত্র 10-20 ৷"

বর্তমান পরিস্থিতিতে 10 জনের মধ্যে 8 জন এই অনলাইন কনসালটেন্সিকে প্রাধান্য দিচ্ছে সেকথা মেনে নিয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রাম ৷ কিন্তু এই অনলাইন চিকিৎসায় কিছু ক্ষেত্রে যে রোগীদের প্রাইভেসি বিঘ্নিত হচ্ছে তাও মেনে নিয়েছেন তিনি ৷ চিকিৎসক বলেন, "বাড়িতে অনেক মহিলাদের দেখি পারিবারিক সমস্যায় রয়েছেন ৷ তারা যখন এই অনলাইনে আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন তখন দেখা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে যাদের সঙ্গে ওই মহিলাদের অশান্তি তারাই সেই সময় সেখানে রয়েছেন ৷ তাদের সামনে প্রকাশ্যে তারা কথা বলতে পারছেন না ৷ "

সব ক্ষেত্রে অনলাইন কনসালটেন্সি সমানভাবে উপযোগী নয় তা মেনে নিয়েছেন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিয়োলজিস্ট প্রকাশ কুমার হাজরাও ৷ তিনি বলেন, "মানুষের যে অন্যান্য অসুস্থতা রয়েছে সেগুলি চিকিৎসার ক্ষেত্রে যদি চিকিৎসকরা রোগীদের স্পর্শ না পায় তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই কিছু বিষয় আমাদের নজর ও মনোযোগ এড়িয়ে যায় ৷ কারণ ডিজিটাল মিডিয়ায় সেটা উপলব্ধি করা সম্ভব নয় ৷ অনলাইনে ECG দেখে হার্টের সমস্যাটা কিছু ক্ষেত্রে বোঝা যায় ৷ তখন আমরা তাদের সেইমতো পরামর্শ দিই ৷ কিন্তু চোখ, কান, হাত-সহ বিভিন্ন অঙ্গ অনুভব করে আমরা যে বিষয়গুলি উপলব্ধি করি সেগুলি অনলাইনে সম্ভব নয় ৷ "

বর্তমানে কোরোনা আতঙ্কের জেরে অনলাইন কনসালটেন্সির চাহিদা বেড়েছে ঠিকই ৷ তবে, চিকিৎসদের ধারণা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও রোগীদের মধ্যে অনলাইনে মেডিকেল কনসালটেন্সির এই চাহিদা বজায় থাকবে ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details