কলকাতা, 17 এপ্রিল: লকডাউনের শুরু থেকেই রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে অনলাইনের মাধ্যমে পঠন-পাঠন চালিয়ে যাওয়ার কথা একাধিকবার সামনে এসেছে । সরকারি, ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর । অন্যদিকে, পরিকাঠামোর দিক থেকে বেসরকারি স্কুলগুলির থেকে পিছিয়ে থাকলেও অনলাইনে পঠন-পাঠনের দিক থেকে পিছিয়ে নেই সরকারি স্কুলগুলিও । 16 মার্চ স্কুল বন্ধ হওয়ার পরপরই রাজ্যের বহু সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের কর্তৃপক্ষ বা স্কুলের কোনও শিক্ষক উদ্যোগী হয়ে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছেন । বর্তমানে বহু স্কুলেই অনলাইনের মাধ্যমে জোরকদমে চলছে পঠন-পাঠন ।
কোরোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে প্রায় আড়াই মাস বন্ধ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । তার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা থমকে থাকবে? কখনই নয় । পরিকাঠামোর দিক থেকে সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি সবসময় পিছিয়ে থাকে বলে মনে করা হয় । কিন্তু, লকডাউনে অনলাইনে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন চালিয়ে যাওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েনি তারা । প্রাথমিকভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পড়ুয়াদের স্টাডি মেটিরিয়াল দেওয়া হয় বিভিন্ন স্কুলে । পরে যতদিন গেছে অনলাইন ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে ভার্চুয়াল ক্লাস, অডিও-ভিজ়ুয়াল ক্লাস করানোর পথে হেঁটেছে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি । কখনও কোনও স্কুলের এক বা একাধিক শিক্ষক নিজের উদ্যোগে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছেন । কখনও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেই অনলাইনে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছে । কোথাও শুধুমাত্র আগামী বছর যে সকল পড়ুয়া বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য পঠন-পাঠন অব্যাহত রাখা হয়েছে । আবার কোথাও প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব ক্লাসেরই পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
কলকাতার বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে সব শ্রেণির পড়াশোনা চলছে অনলাইনে । স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "আমরা লকডাউন শুরুর পর পরই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দশম, একাদশ, দ্বাদশের কয়েকটি বিষয়ের ক্লাস শুরু করেছিলাম । এখন আমাদের প্রেপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হচ্ছে । কেউ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে করছেন ভিডিয়ো, অডিয়ো পাঠিয়ে । কেউ হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ করে ভিডিয়ো চ্যাটে পড়াচ্ছেন । কেউ অন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভার্চুয়াল ক্লাস করাচ্ছেন । এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজ়েন্টেশন দেখানো যাচ্ছে, পোল করানো যাচ্ছে, মেয়েদের পড়া বোঝানো যাচ্ছে, ওদের প্রশ্ন নেওয়া যাচ্ছে । আমাদের খুব ভালো ক্লাস হচ্ছে । নবম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ভার্চুয়াল ক্লাস হচ্ছে । সপ্তম শ্রেণিরও ভার্চুয়াল ক্লাস শুরু করব বলে ভাবছি । তবে, এই পদ্ধতিতে সবাইকে রিচ করা সম্ভব নয় । কোনও ক্লাসে দেখা যাচ্ছে কয়েকজনের স্মার্টফোন নেই । সেক্ষেত্রে আমরা তাদের বলেছি তোমাদের যে বন্ধুরা ক্লাস করছে তাদের ফোন কর । তারা তোমাদের বলে দেবে কী পড়ানো হল, কী অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে । অসুবিধা হলে টিচারদের নম্বর দিয়েছি, তারা তাদেরও ফোন করতে পারে বোঝার সমস্যা হলে ।"