জঞ্জাল ফেলার বেপরোয়া মানসিকতায় লাগাম দিতে চালু হল 'তৎক্ষণাৎ জরিমানা' কলকাতা, 5 জানুয়ারি:শহরজুড়ে শুরু হয়েছে উৎস থেকে বর্জ্য পৃথকীকরণ প্রকল্প। প্রতি ওয়ার্ডে দফায় দফায় চলছে নাগরিকদের বালতি দেওয়ার কাজ। কলকাতার রাস্তাঘাট জঞ্জাল মুক্ত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। আর বাড়ি গিয়ে ময়লা ফেলার বালতি হাতে পৌঁছে দেওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে নাগরিকদের একাংশের বেপরোয়া মনোভাব। গতানুগতিকভাবেই পরিষ্কার রাস্তায় ময়লা ভরতি প্লাস্টিক ফেলছেন যথেচ্ছ। আর এমন নাগরিকদের বাগে আনতে ময়দানে নেমেছেন কলকাতা কর্পোরেশনের (Kolkata Corporation) 13 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও 3 নম্বর ওয়ার্ডের বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য কিশোর রাউথ।
ওয়ার্ডে কোনও জায়গায় কাউকে জঞ্জাল ফেলতে দেখলেই কর্পোরেশনের জঞ্জাল সাফাই বিভাগের কর্মীরা গিয়ে 'স্পট ফাইন' করছেন (On Spot Fine Launch to Kolkata for Roads) । এই সিদ্ধান্তে এলাকার বহু মানুষই খুশি হয়েছেন। নাগরিকদের কেউ বলছেন, এটাই করার দরকার ছিল। জঞ্জাল তুলে নিয়ে যাওয়ার পর পরিচ্ছন্ন রয়েছে দেখেও এক গাদা আবর্জনা ফেলে যায় লোকজন। বলতে গেলেই অশান্তি। তার থেকে কাউন্সিলর যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটাই বেশ ভালো। তাঁর নির্দেশে এমন বেপরোয়া লোকজনকে পৌর কর্মীরা স্পট ফাইন করছেন। আরও এজনের কথায়, ফাইন করা শুরু হয়েছে বলে রাস্তার হালও অনেক ফিরেছে। এক-একটি এলাকায় কয়েকজনকে ফাইন করার জেরে ভয় জন্মেছে অনেকের মনে। তাই এখন আগের মতো যথেচ্ছ জঞ্জাল ফেলছেন না।
আরও পড়ুন:আবর্জনা সংগ্রহ বন্ধ করে আন্দোলনে দুর্গাপুর পৌরনিগমের সাফাইকর্মীরা
কাউন্সিলর অনিন্দ্য কিশোর রাউথ জানাচ্ছেন, দূষণ থেকে শুরু করে ডেঙ্গি আটকানো সম্ভব যদি নিয়মমাফিক এলাকা পরিষ্কার রাখা যায়। ওয়ার্ডে ধাপে ধাপে নাগরিকদের হাতে নীল ও সবুজ বালতি দিচ্ছি। কোনটায় কী ধরনের জঞ্জাল ফেলতে হবে বলে দিচ্ছি। সকালের পর বিকালে এলাকা সাফ করা হয় নিয়মিত। কিন্তু বেশ কিছু নাগরিক এসবের ধারকাছে দিয়েও যান না। পরিষ্কার রাস্তায় যখন ইচ্ছে যথেচ্ছভাবে ময়লা ফেলে দেন। এই নাগরিকদের বাধ্য হয়ে জরিমানা করার নির্দেশ দিয়েছি। পৌর আইন আছে। সেই মাফিক 210 থেকে 5000 টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যায়। বাধ্য হয়ে এই পথে হাঁটতে হচ্ছে। ফলও মিলছে। জরিমানা করার জেরে অনেকেই নিয়ম মাফিক জঞ্জাল ফেলছেন আর বেলাগামভাবে যথেচ্ছ ফেলছেন না।
উল্লেখ্য, এলাকায় ডাস্টবিন থাকায় জঞ্জাল ফেলার বালতি বা সাফাই কর্মীর আসার কোনও তোয়াক্কা করেন না অধিকাংশ মানুষ। তারা নিজের ইচ্ছে মতো বাড়ির বারান্দা বা দরজা দিয়ে ছুড়ে রাস্তায় ফেলে দেন। কোটি কোটি খরচে চেষ্টা করেও রাস্তার জঞ্জাল চিত্রের বদল করতে পারেনি পৌরনিগম কর্তৃপক্ষ। কর্পোরেশন সিদ্ধান্ত হয়েছে এবার থেকে আবাসিক অঞ্চলে ডাস্টবিন দেওয়া হবে না। পুরনোগুলিও একে একে তুলে নেওয়া হবে। অন্যদিকে যাঁরা রাস্তায় যথেচ্ছ জঞ্জাল ফেলবেন ধরা পড়লে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। করা হবে ভালো অঙ্কের জরিমানা। শুধুমাত্র পৌর নিগমের নির্ধারিত বাণিজ্যিক জোনেই রাস্তার ধারে থাকবে ডাস্টবিন।
আরও পড়ুন:জল-জঞ্জাল জরিমানা, মোটা টাকা আয় কলকাতা পৌরনিগমের স্বাস্থ্য বিভাগের