কলকাতা, ৮ নভেম্বর: অসমে NRC (জাতীয় নাগরিপঞ্জি)-তে নাম তোলার জন্য সার্টিফিকেট চেয়ে প্রায় 9 হাজার আবেদন জমা পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদে । যাঁরা ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষায় পাশ করেছেন কিন্তু সার্টিফিকেট হারিয়ে ফেলেছেন, তাঁরাই মূলত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দারস্থ হয়েছিলেন । পর্ষদ সূত্রে জানা গেছে, তাদের কাছে গত এক মাস ধরে পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ তাঁদের সার্টিফিকেট সংশোধনের আবেদন করছেন। আবেদন আসছে হারিয়ে ফেলা সার্টিফিকেট চেয়েও । প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি NRC-র আতঙ্ক বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে?
অসমে NRC-র জন্য নাগরিকদের কাছ থেকে যে সমস্ত নথিপত্র চাওয়া হয়েছিল সেগুলির মধ্যে অন্যতম ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষায় পাশ করার সার্টিফিকেট। তাই গত বছর প্রায় 9 হাজার অসমবাসী দ্বারস্থ হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের । ১৯৭৩ সালের আগে ত্রিপুরায় ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সেই রাজ্যে কোনও বোর্ড ছিল না। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ত্রিপুরায় ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষা নিত । ১৯৭৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ত্রিপুরায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাজ শুরু হয় ।
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ১৯৭৩ সালের আগে ত্রিপুরা থেকে যাঁরা ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষা পাশ করেছিলেন তাঁদের অনেকে পরবর্তীতে অসমে চলে যান । তাঁরাই মূলত সার্টিফিকেট চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন ।
এদিকে, BJP-র নেতৃত্ব বার বার বলছে, অসমের মতো পশ্চিমবঙ্গেও NRC হবে। আর তাতেই তটস্থ পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জোগাড় করতে শুরু করেছেন অনেকে । পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ মাসে প্রায় প্রতিদিনই ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষায় পাশ করার সার্টিফিকেট চেয়ে ৭০-৮০টি করে আবেদন জমা পড়ছে । যাঁরা আবেদন করছেন, তাঁরা সকলেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে কেউ সার্টিফিকেটে থাকা ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন, আবার কেউ আবেদন করেছেন হারিয়ে ফেলা সার্টিফিকেটের কপি চেয়ে ।
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের লোকজন তাঁদের সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য সংশোধন করার আবেদন করছেন। হারিয়ে যাওয়া শংসাপত্র পেতেও আবেদন আসছে। প্রায় প্রতিদিনই ৭০-৮০টা করে আবেদন আসছে গত একমাস ধরে।" NRC-র ভয়েই এত আবেদন জমা পড়ছে বলে মনে করছেন পর্ষদের ওই আধিকারিক।