পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

এবার অনশনে মাদ্রাসার ১২৫ চাকরিপ্রার্থী, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি - madrassa

গতকালই অনশন প্রত্যাহার করেছেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনশন শুরু করেছেন প্রায় ১২৫ জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁরা চান, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ।

ছবি-মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিবাদ ব্যানার

By

Published : Mar 29, 2019, 4:45 AM IST

কলকাতা, ২৯ মার্চ : একদিকে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে গতকাল অনশন তুলে নিয়েছেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা। অন্যদিকে, মুখ‍্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবিতে SSC চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অনশনে বসেছে আরেকটি দল। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বুধবার বিকাল ৪টে থেকে প্রেস ক্লাবের কাছে অনশনে বসেন প্রায় ১২৫ জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের অভিযোগ, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন তার নিজস্ব গেজ়েটের নিয়ম ও মাদ্রাসায় নিয়োগ নিয়ে ২০১৭ সালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে। যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী তাই তাঁর হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন তাঁরা।

অনশন কর্মসূচি থেকে কী কী দাবি তোলা হচ্ছে? আর কীভাবে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন দুর্নীতি করছে? এবিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আসা চাকরিপ্রার্থী গণেশ ঘটক বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ষষ্ঠ SLST পরীক্ষায় আমরা সকলেই উত্তীর্ণ। ২০১৩ সালের ষষ্ঠ SLST পরীক্ষার নোটিফিকেশন অনুযায়ী, আমরা যে শূন্যপদ দেখেছিলাম সেটা হচ্ছে ৩১৮৩টি। ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত ভ্যাকেন্সি কাউন্ট হবে। সেক্ষেত্রে, ভ্যাকেন্সি নিশ্চয়ই বাড়ার কথা। কিন্তু ২০১৮ সালের ২২ জুন যখন চূড়ান্ত প্যানেল প্রকাশিত হয় সেখানে দেখা গেছে চেয়ারম্যান প্রেস মিট করে বলেছেন, মাত্র ২৫৬০টি ভ্যাকেন্সিতে নিয়োগ করা হচ্ছে। অথচ আমরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মাদ্রাসায় খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সেটা ২৫৬০ নয়, ১৯০০-র আশপাশে। চেয়ারম্যান নিজের গেজ়েট নিজেই লঙ্ঘন করেছেন। শুধু তাই নয়, আমাদের কাছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে। দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসা শিক্ষায় তথা মাদ্রাসা স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাবে ছাত্রদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এজন্য সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে শিশুদের শিক্ষার স্বার্থে ২৬০০-র বেশি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। কমিশন সেই নির্দেশও লঙ্ঘন করেছে। আমরা প্রত্যেকেই পরীক্ষায় পাশ করে, ইন্টারভিউ দিয়েও আজ বঞ্চিত।"

গণেশ ঘটক আরও বলেন, "আমাদের দাবি, অবিলম্বে প্যানেলভুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের যাবতীয় দুর্নীতি ও অন্যান্য বিষয় যা আমরা লক্ষ্য করেছি তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি। আমাদের বিশ্বাস যে এতটা দুর্নীতির কথা হয়তো উনি জানেন না। উনি জানলে আমরা নিশ্চয়ই সমাধানের পথ খুঁজে পাব। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা মুখ্যমন্ত্রীর লিখিত আশ্বাস পাই, আমরা অনশন তুলব না।"

এদিকে SSC চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চে যখন মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন তখন তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন এই চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু, তা সম্ভব না হওয়ায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গতকাল এই অনশনকারীদের মুখোমুখি হন মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান। এবিষয়ে গণেশ ঘটক বলেন, "মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুর রউফ এসেছিলেন। তাঁকে আমরা সবরকম প্রশ্ন করেছি। কিন্তু, তাঁর কাছ থেকে কোনও সদুত্তর পাইনি। তাঁর কোনও উত্তরই আমাদের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। তিনি বললেন গেজ়েটের ব্যাপারে কিছু জানেন না। যখন সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার দেখাতে গেলাম উনি বললেন এবিষয়ে খতিয়ে দেখবেন। উনি আমাদের চারজনকে ডাকলেন। শেষ পর্যন্ত বললেন, উনি যা করেছেন আইনত করেছেন, ন্যায়সঙ্গতভাবে করেছেন।"

অন্যদিকে পুলিশ বারবার এসে তাঁদের উঠে যেতে বা জায়গা খালি করতে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের চাকরিপ্রার্থীদের। অভিযোগ, তাঁদের মশারি ছিঁড়ে দেওয়া হয়। আন্দোলন তুলে নিতে বলা হয়। কিন্তু, বিষয়টি তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যেতে চান।

ABOUT THE AUTHOR

...view details