কলকাতা, 15 মে : আগামীকাল রাত 10 টার পর আর কোনও প্রচার করা যাবে না । এই নির্দেশিকা জারি করল নির্বাচন কমিশন । কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, যাদবপুর, ডায়মন্ড হারবার, কলকাতা উত্তর ও কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলি কোনও রকম প্রচার চালাতে পারবেন না ।
সাধারণত ভোট শুরু হওয়ার 48 ঘণ্টা আগে থেকে প্রচার বন্ধ করতে হয় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের । এর আগের ছয়দফায় তাই হয়ে এসেছে । কিন্তু এক্ষেত্রে কমিশন সময়সীমা কমিয়ে দিল ।
কেন এই সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন ?
সংবিধানের 324 ধারা প্রয়োগ করে এই বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন । সংবিধানের 324 ধারা রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি এবং নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও সুষ্ঠভাবে ভোটপ্রক্রিয়া পরিচালনা করার দায়িত্ব দিয়েছে । এবার লোকসভা ভোটে প্রথম থেকেই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছে বিরোধীরা । রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার 13 মে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছিলেন । তিনি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যে রিপোর্ট দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, "রাজ্যের নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে করার জন্য ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ সহ অন্যান্য কাজ ঠিকঠাক চললেও দেখা গেছে যে, অবাধ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ অসহযোগিতা করছে । উপর থেকে দেখে সবকিছু ঠিক মনে হলেও সাধারণ ভোটরদের অনেকেই খোলাখুলি জানিয়েছেন তাঁরা আতঙ্কিত বোধ করছেন । "
এখনও পর্যন্ত রাজ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন রাজনৈতিক সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যু হয়েছে । এছাড়া বিরোধীদের অভিযোগ, গত ছয় দফার ভোটে রাজ্যের একাধিক জায়গায় শাসকদলের তরফে বুথ জ্যাম, ছাপ্পা ভোট হয়েছে । আরও অভিযোগ, ভোট চলাকালীন ভারতী ঘোষ, অর্জুন সিং সহ বিরোধী দলের একাধিক প্রার্থীকে হেনস্থা করা হয়েছে ।
গতকাল কলকাতায় অমিত শাহর রোড শো চলাকালীন কলেজ স্ট্রিটে তুমুল গোলমাল হয় । বাইক পোড়ানো, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুর, ইটবৃষ্টি ও পুলিশের লাঠিচার্জে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে । এরপরই আজ কমিশন 324 ধারা প্রয়োগ করে সপ্তম দফার নির্বাচনের আগে প্রচারের সময়সীমা কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভবত এই প্রথম দেশে নির্বাচন কমিশন 324 ধারা প্রয়োগ করে ভোটের প্রচারের সময়সীমা কমানোর সিদ্ধান্ত নিল ।