কলকাতা 31 মার্চ : নন্দীগ্রাম আন্দোলনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 7 এপ্রিল পর্যন্ত নতুন করে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না ৷ আজ এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। একাধিক মামলাকারী আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেই মামলার শুনানিতেই এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷
মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট এই একই মামলায় আবু সুফিয়ান নামে এক অভিযুক্তকে আপাতত গ্রেফতার না করার নির্দেশ দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মূল মামলায় আমাদের পার্টি হিসেবে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু আদালত এখনও আমাদের পার্টি হিসেবে এই মামলায় যুক্ত করেনি। আমাদের আবেদন, এই মামলায় আমাদের যুক্ত করা হোক এবং সুপ্রিম কোর্টের যে নির্দেশ, সেই নির্দেশ আমাদের ক্ষেত্রেও বলবৎ করা হোক।’’
অন্যদিকে, আইনজীবী সুদীপ্ত মিত্র বলেন, সুপ্রিম কোর্ট একজন অভিযুক্তের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ সবার জন্য প্রযোজ্য কেন হবে? যদিও বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ আইনজীবী সুদীপ্ত মিত্রর বক্তব্যকে খারিজ করে দেন ৷ ডিভিশন বেঞ্চ তাদের নির্দেশে জানায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই আপাতত এই মামলায় যাদেরকে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ, তাদের সবার জন্যই নতুন করে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। আইনি ভাষায় যাকে বলা হয়েছে ‘স্ট্যাটাস ক্যুও মেন্টেন’ করতে হবে।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনে অভিযুক্ত স্বদেশ দাস , আবু তাহের, শংকর কুমার দাস, তপন গায়েনসহ একাধিক ব্যক্তি আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অভিযুক্তদের তরফে বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে বলা হয়, গত 5 মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন আদালত গত 15 মার্চ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুনরায় গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করেছে। কিন্তু অভিযুক্তদেরই একজন আবু সুফিয়ান সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে আপাতত গ্রেফতার না করার নির্দেশ দিয়েছে । এই একই নির্দেশ সমস্ত অভিযুক্তের জন্যই বলবৎ হওয়া উচিত বলে মামলাকারীদের পক্ষ থেকে আজ আদালতে জানানো হয়। এরপরই বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ, নতুন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ায় নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন :নন্দীগ্রাম আন্দোলন কারো একার নয়, মমতাই সাফল্য়ের সিঁড়ি : ফিরহাদ
2007 সালে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা প্রায় 13টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার ৷ যার বিরুদ্ধে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলায় গত 5 মার্চ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সবক’টি মামলায় নিম্ন আদালতের নির্দেশের ওপর, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে। আরও অন্তত 40 জন এইরকম অভিযুক্তকে এই মামলায় যুক্ত করার করার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত 15 মার্চ নিম্ন আদালত এদের বিরুদ্ধে পুনরায় গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করে ও সমন পাঠানোর নির্দেশ দেয়। বাধ্য হয়ে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট আবু সুফিয়ান সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন । সুপ্রিম কোর্ট আবু সুফিয়ানের গ্রেফতারের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল ।