কলকাতা, 3 অগস্ট : জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৷ এতে তাঁর সম্মানহানি হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করলেন তাঁর আইনজীবী পার্থ ভৌমিক ৷ অন্যদিকে মানবাধিকার কমিশনের হয়ে আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি (Mahesh Jethmalani) অভিযোগ করেন রাজ্য ধর্ষণের ঘটনা অস্বীকার করলেও মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে তার প্রমাণ রয়েছে ৷ গতকাল রাজ্যের হিংসাত্মক ঘটনার তদন্তে আসা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দলের (National Human Rights Commission, NHRC) রিপোর্ট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ভার্চুয়াল শুনানি ছিল ৷ এখানে 5 বিচারপতির বেঞ্চে মানবাধিকার কমিশন ও মামলাকারীর আইনজীবী এই রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তভার কোনও নিরপেক্ষ সংস্থা বা সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান আদালতে ৷
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আইনজীবীর বক্তব্য
জ্যোতিপ্রিয়র আইনজীবী পার্থ ভৌমিক 5 বিচারপতির বেঞ্চে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে জানান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) বিশেষ দলের প্রতিনিধিরা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে কোনও কথা না বলেই তাঁকে কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসেবে দাগিয়েছে ৷ তাতে তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয়র সম্মানহানি হয়েছে বলে আদালতে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী ।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে আইনজীবীর বক্তব্য
বর্ষীয়ান আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি (Mahesh Jethmalani) জানান, পুলিশের হিসেবে খুন বা খুনের চেষ্টা হয়েছে 29 টি, কিন্তু জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট বলছে খুন হয়েছে 52 টি । রাজ্যের হিসেবে মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে 12 টি । রাজ্য বলছে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি ৷ আর এনএইচআরসি-র (NHRC) হিসেবে সংখ্যা প্রায় 79টি ৷ এর মধ্যে ধর্ষণের ঘটনাও রয়েছে এবং বহু ক্ষেত্রে এফআইআর (FIR) নেওয়া হয়নি ।
পুলিশের অভিযোগ না-নেওয়া প্রসঙ্গে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় (Justice Indra Prasanna Mukhopadhyay)
যদি থানা অভিযোগ না নেয়, তাহলে অভিযোগকারী এসপি-র (SP) কাছে যেতে পারেন । এসপিও যদি সাহায্য না করেন, তাহলে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন, জানান বিচারপতি । প্রত্যেক রাজ্যে অপরাধ সংগঠিত হয় ।
হিংসাত্মক ঘটনার প্রমাণ চাইলেন আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি (Mahesh Jethmalani)
রাজ্যের দাবি ছিল, 2-5 মের মধ্যে রাজ্যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটলেও তার পর থেকে তা নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে ৷ এর সমর্থনে মানবাধিকার কমিশনের আইনজাবী 2-5 মে পর্যন্ত অভিযোগের সংখ্যা এবং 5 মের পরে অপরাধের পরিসংখ্যান চান রাজ্যের কাছে ৷ তিনি বলেন, "এই পরিসংখ্যান পেলে, আমাদের ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস চিহ্নিত করতে সুবিধা হবে ।"
পুলিশের সঙ্গে কি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কথা হয়েছিল ?
রাজ্য দাবি করেছে যে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দল পুলিশের সঙ্গে কথা বলেনি ৷ কিন্তু জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের 8 নম্বর পৃষ্ঠায় দেখা যাচ্ছে যে, মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দল পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছে । দলের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন অঞ্চলে থানাতেও গিয়েছিলেন । এ প্রসঙ্গে আইনজীবী মহেশের দাবি, "প্রাথমিকভাবে যা তথ্য প্রমাণ রয়েছে, তার ভিত্তিতেই মামলার তদন্তভার নিরপেক্ষ কোনও সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া যায় ।"