কলকাতা, 27 জুন: ক্রমাগত চরিত্র বদলাচ্ছে প্রকৃতি। দুর্যোগের রূপ পরিবর্তন হচ্ছে । একদিকে যেমন একের পর এক শক্তিশালী সাইক্লোনের সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে বজ্রপাতের সংখ্যা। বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে নজর রাখলে দেখা যাবে, উত্তরোত্তর হারে বজ্রপাতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যু। অতি সম্প্রতি বিহার ও উত্তরপ্রদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে শতাধিক মানুষের। কিন্তু এই পরিস্থিতি থেকে কি রেহাই পাওয়া যেতে পারে ? পূর্বাভাস পেয়ে মানুষজন কি ফাঁকা জায়গা থেকে নিরাপদ স্থানে যেতে পারেন ? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা ? কীভাবে এড়াবেন বিপদ?
জল গরম হওয়ার পর জলীয় বাষ্প হয়ে উপরে উঠে যায়। উপরে উঠতে উঠতে তার তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। একসময়ে তা ঘনীভূত হয়ে যায়। ঘনীভূত হওয়ার পরই একটি কণার সঙ্গে আরেকটি কণার সংঘর্ষের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। সংঘর্ষ হলে তারা চার্জড বা আহিত হয়। এভাবেই একসঙ্গে অনেক আহিত কণা জড়ো হলে মেঘের মধ্যে একটা চার্জড স্তর তৈরি হয়। মেঘের উপরের অংশটি পজ়িটিভভাবে চার্জড হয় এবং ভূপৃষ্ঠের দিকে যে স্তর থাকে সেটা নেগেটিভভাবে। অনেক কণা আহিত হওয়ার পর পৃথিবীতে যে ইলেকট্রন কণা আছে, সেগুলি মেঘের কাছাকাছি যাওয়ার পর সরে যায় ৷ ফলে, পজ়িটিভ আদানের জায়গা তৈরি হয়। নেগেটিভ আদানের স্তর থেকে আহিত কণাগুলি জলীয় বাষ্প, ধূলিকণার সংস্পর্শে এসে যখন বাতাসের মধ্যে দিয়ে আসে, তখন কয়েক লাখ ভোল্ট, বিলিয়ন ভোল্ট পর্যন্ত তড়িৎ প্রবাহিত হতে থাকে। এটাই হল বজ্রপাত। প্রায় তিন লাখ কিলোমিটার বেগে তা মাটিতে নেমে আসে ৷
বজ্রপাত সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিচ্ছেন সত্যজিৎ চক্রবর্তী এবিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাটমোস্ফিয়ারিক সায়েন্সের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক ডঃ সুব্রতকুমার মিদ্যা জানাচ্ছেন, পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে বায়ুমণ্ডল বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। সোলার কসমিক রে বা গ্যালাক্সি কসমিক রে বায়ুমণ্ডলের কণাগুলিকে চার্জ করে। পরে পরিবেশে বজ্রবিদ্যুৎসহ মেঘ তৈরি হয়, তার উপরের এবং নিচে তাপমাত্রায় বিরাট পার্থক্য থাকে। এটা এক ধরনের প্রসারণ । যত উপরের দিকে যাবে, তত অ্যাডিয়োবটিক প্রসারণ হয় এবং কুলিংটা বেশি হয়। মেঘের উপরের এবং নিচের তাপমাত্রা এক থাকে না। তাই ওখানে একটা চার্জের বিভাজন হয়। তাই এই ধরনের যে বজ্রগর্ভ মেঘ আমাদের বায়ুমণ্ডলে একটা ব্যাটারি বা জেনারেটর হিসেবে কাজ করে তা বায়ুমণ্ডলের কণাগুলিকে আয়রনাইজ়ড করে। নানা কারণে এই আয়রনাইজ়েশন হয়। আমরা এখন যেটা দেখি, আকাশ পরিষ্কার, তাও আমাদের বায়ুমণ্ডলের মধ্যে চার্জের বিভাজন হচ্ছে এবং বজ্রপাত হচ্ছে। সেটা বোঝা যায় না। যদি স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে প্রত্যেক মুহূর্তে 2 হাজার বজ্রপাত হচ্ছে।সুব্রতবাবু জানাচ্ছেন, বজ্রপাত তিন ধরনের হয়। প্রথমত, ইন ক্লাউড। যা মেঘের মধ্যে হয়। দ্বিতীয়ত, ইন্টার ক্লাউড। যা এক মেঘ থেকে অন্য মেঘের মধ্যে হয়। তিনি বলেন, "এগুলো আমাদের জন্য বিপজ্জনক নয়। বিপজ্জনক হচ্ছে ক্লাউড টু গ্রাউন্ড বজ্রপাত। যেটা এখন বেড়ে গেছে। ক্লাউড টু গ্রাউন্ড বজ্রপাতের ফ্রিকোয়েন্সি বেড়ে যাচ্ছে। বেড়ে যাওয়ার ফলে বিপত্তি বাড়ছে।" কেন বাড়ছে প্রকৃতির রোষ ? সুব্রতবাবু বলেন, "এর পিছনে জলবায়ু বিজ্ঞান যুক্ত। বিগত 150 বছরে যদি আমরা দেখি, তাহলে বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রায় .85 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়ে গেছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চার্জ বিভাজন বেশি হয়। এছাড়া যদি কোনও ঝড় হয় বা সাইক্লোনিক ডিস্টার্বেন্স হয়, তাহলে বায়ুমণ্ডলের কণাগুলির মধ্যে ঘর্ষণ বাড়ে ৷ আর ঘর্ষণ বাড়লেই চার্জের বিভাজন বাড়বে। এখন দেখা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের ফ্রিকোয়েন্সিও বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এগুলিই বজ্রপাতের সংখ্যা বাড়ার কারণ। আর বজ্রগর্ভ মেঘ যদি নিচে থাকে, তাহলে ক্লাউড টু গ্রাউন্ড বজ্রপাত বেশি হবে। আর তা আমাদের পক্ষে ক্ষতিকর। অনেকেই বলছেন, দূষণ বেড়ে গেছে বলে বজ্রপাতের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সেটাও একটা কারণ। কিন্তু, কোন দূষিত কণা ঠিক এর জন্য দায়ি, তা নিয়ে এখনও গবেষণা হয়নি। সবাই জানে, পৃথিবীতে দূষণ বাড়ছে। বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এখনও পর্যন্ত আমরা যেটা বলতে পারি, বজ্রপাতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। যা সত্যিই আশঙ্কাজনক। আমরা যদি মৃত্যুর সংখ্যা হিসেব করে দেখি, তাহলে গত কয়েক বছরে শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বে সবথেকে বেশি মানুষ মারা গেছেন বজ্রপাতে। আগে ঘূর্ণিঝড়ে বহু মানুষ মারা যেতেন। কিন্তু, বর্তমানে সঠিক পূর্বাভাসের কারণে তা আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। কিন্তু, লাইটনিং অ্যাক্টিভিটি এমন একটি ঘটনা যেগুলির সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া এখনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যার ফলে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।"
বজ্রপাত থেকে বাঁচার নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে ডঃ সুব্রতকুমার মিদ্যা পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কার্যকরী সভাপতি ও পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক সত্যজিৎ চক্রবর্তী বলেন, "সম্প্রতি বজ্রপাতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ নিয়ে গবেষণা এখনও চলছে। যতটুকু জানা গেছে, তাতে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় ও অনেক বিজ্ঞানীই মনে করেন, কলকারখানা বা যানবাহনের যে কণাগুলি বাতাসে যাচ্ছে তাদের মধ্যে হালকা কণাগুলি উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। আর ভারী কণাগুলি মাটির কাছাকাছি থাকছে। এই ধরনের কণাগুলি বেশিরভাগই আয়রনাইজ়ড। এই আয়রনাইজ়ড কণাগুলির মধ্যে যখন ওইরকম বিদ্যুতের স্তম্ভ আসছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই বজ্রপাতের পরিমাণ পূর্বের তুলনায় বেড়ে যাচ্ছে।"মানুষকে লক্ষ্য করেই কেন বজ্রপাত? কেন উত্তরোত্তর বাড়ছে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা? সুব্রত কুমার মিদ্যা বলেন, "মানুষের শরীর ইলেকট্রিসিটির জন্য ভালো কন্ডাক্টর। ভালো কন্ডাক্টরের মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রিসিটি কাজ করবে, সেটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। সাধারণত এটা হয় না। কারণ, আমরা একটা ইলেকট্রিক ফিল্ডের মধ্যে বসবাস করি। পা থেকে মাথা পর্যন্ত ইলেকট্রিক ডিফারেন্স হচ্ছে 200 ভোল্ট। কিন্তু, সেটা আমাদের উপর প্রভাব ফেলে না, কারণ আমাদের পা মাটিতে থাকে। আমাদের পা মাটিতে থাকায় আমাদের মাথাটাও পৃথিবীর জ়িরো পোটেন্সিয়ালে আছে। কিন্তু, উচ্চতা অনুযায়ী, পা থেকে মাথা পর্যন্ত 200 ভোল্টের পার্থক্য থাকার কথা। ভালো কন্ডাক্টর হওয়ার জন্য আমাদের মাথা থেকে পা একই ভোল্টেজ থাকে। যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরা বেশিরভাগই খোলা জায়গায় ছিলেন ৷ গাছের তলায় বা মাঠে । বিহারেও বেশিরভাগ মানুষ মাঠে ছিলেন। মাঠে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ফলে, ওখানেই মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।"
বজ্রপাতের পূর্বাভাসের জন্য একদিকে জিওস্টেশনারি লাইটনিং ম্যাপার ও অন্যদিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা হয়। এবিষয়ে সত্যজিৎ চক্রবর্তী বলেন, "আজকাল জানা সম্ভব, কোথায় কতটা শক্তিশালী বজ্রপাত হতে পারে। কারণ, আমরা মহাকাশে উপগ্রহ পাঠিয়েছি। উপগ্রহ মারফত বিভিন্ন রকম সেন্সরের মাধ্যমে আকাশের চার্জড পার্টিকেলের পরিমাণ কত তা মাপা সম্ভব। সেই বজ্রগর্ভ মেঘের আয়তন কত, কতটা বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তা তৈরি হয়েছে, সেটা মাপার জন্য বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন। যার জন্য বজ্র সহযোগে বৃষ্টির আগাম সতর্কতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। যদিও, অনেকসময় হঠাৎ করে বজ্রপাত হয়। সেটার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে, সাধারণভাবে পূর্বাভাস দেওয়া যায়।"
আরও পড়ুন : আধঘণ্টা আগেই বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেবে এই অ্যাপ
বজ্রপাতের পূর্বাভাসের উপায় নিয়ে সুব্রত কুমার মিদ্যা বলেন, "এই সমস্ত ইন্সট্রুমেন্ট এখন ডেভেলপ করছে। আমাদের কাছেই প্রথম এই যন্ত্রটা ছিল। তারপর রাজ্য সরকার অনেকগুলি লাইটনিং ডিটেক্টর কিনেছে। বিভিন্ন জায়গায় সেগুলি সেট করা হয়েছে। তবে, বিদেশের মতো আমাদের এখানে পরিকাঠমো নয় ৷ IITM থেকে অনেকগুলি লাইটনিং ডিটেক্টর নানা জায়গায় সেট করা হয়েছে। IMD-ও লাইটনিং ডিটেক্টর সেট করেছে। দামিনী বলে একটা নেটওয়ার্ক সেট করেছে। যেখানে স্থানীয় এলাকায় বজ্রপাত সম্পর্কে জানা যায় ও সতর্ক হওয়া যায়। ধীরে ধীরে পুরো বিষয়টির উন্নতি হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়ত এই পূর্বাভাসের বিষয়টি আরও ভালো ও নির্দিষ্ট হবে। বজ্রপাত তো বলে কয়ে আসে না। ফলে, সঠিক পূর্বাভাস করা এখনও সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে অ্যালার্টটা মোবাইলের সঙ্গে লিঙ্ক করে দেওয়া যেতে পারে ৷ তাহলে কোন এলাকায় বজ্রপাত হতে চলেছে, তা বোঝা যাবে ৷ সেই অনুযায়ী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।"
জিওস্টেশনারি লাইটনিং ম্যাপার (GLM) নিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, "জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট দিয়ে যে সমস্ত পর্যবেক্ষণ হয়, সেটা মোটামুটি ফিক্সড। আমাদের পৃথিবীর সাপেক্ষে তার রোটেশন হয় না। তাই স্টেশনারি বলা হয়। সেটা ঠিকই আছে। স্যাটেলাইট অবজ়ারভেশনের উপর যে তথ্য বিশ্লেষণ হয়, সেটা বৃহৎ এলাকার উপর হয়। কারণ, স্যাটেলাইট একটি বড় এলাকার জন্য পর্যবেক্ষণ নিচ্ছে। তবে, সেখানে ওই বড় এলাকার মধ্যে ঠিক কোন কোন এলাকায় বজ্রপাত হবে, তার পূর্বাভাস সম্ভব নয়। বড় এলাকার জন্য GLM ঠিক আছে। কিন্তু, নির্দিষ্ট কোনও জায়গায় বজ্রপাত হতে চলেছে, সেটা ওই ব্যবস্থা দিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই লাইটনিং ডিটেক্টরের প্রয়োজনীয়তা বেশি।"
কীভাবে এড়ানো সম্ভব বজ্রপাত ? সুব্রতবাবু বলেন, "পূর্বাভাস ব্যবস্থাকে নিখুঁত করা উচিত। যত ছোটো এলাকার জন্য করা যাবে, তত ভালো। পাশাপাশি সেই জায়গার লোকেদের কাছে সেই সর্তকতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি অ্যাপ রয়েছে ৷ যেমন দামিনী ৷ এর মাধ্যমে যদি প্রত্যেকটি এলাকার মানুষের মোবাইলে তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া যায় যে বজ্রপাত হতে চলেছে, তখন মানুষজন একটা আশ্রয় খুঁজে নেওয়ার সময় পাবেন। আশ্রয় বলতে একটা ক্যাভিটির মধ্যে ঢুকে যেতে হবে। আমি বলছি না, প্রত্যেকটি বাড়ি সুরক্ষিত ৷ কারণ আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতে এখন লাইটনিং অ্যারেস্টার লাগানো নেই। নাহলে বাড়িটাই নিরাপদ নয়। তবু, একেবারে ফাঁকা জায়গা থেকে ক্যাভিটির ভিতরে থাকলে অনেকটা নিরাপদ। আর ফাঁকা জায়গায় থাকলে মাটিতে বসে শরীরকে ভাঁজ করে, নিজেকে সংকুচিত করলে, অনেকটা রক্ষা পাওয়া যাবে। এই সমস্ত সর্তকতা অবলম্বন করতেই হবে ৷ নাহলে মৃত্যু ক্রমশ বাড়বে ৷"
সুব্রতবাবু আরও বলেন, "বজ্রপাতের সময় ফাঁকা মাঠে বা খোলা জায়গায় থাকলে মাটিতে বসে শরীরটাকে একেবারে সংকুচিত করা দরকার। মানুষতো সেটা করে না। আর বুঝতেও পারে না যে, এই এলাকায় লাইটনিং অ্যাক্টিভিটি হতে চলেছে। সেই ফোরকাস্টিং অ্যারেঞ্জমেন্ট এখনও ডেভেলপ করা যায়নি। সেটা যদি করা যেত তাহলে বিষয়টি অনেকটা এড়ানো যেত। যেমন, আমাদের লাইটনিং অ্যাক্টিভিটি ডিটেক্টর আছে ৷ তাতে আমরা 10 কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে 30 মিনিট আগে বলে দিতে পারি যে, এই এলাকায় সিভিয়ার লাইটনিং অ্যাক্টিভিটি হতে চলেছে। এটিকে অনেকেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলে। কিন্তু, আমরা সেভাবে করি না। এই সিস্টেমটা যদি ডেভেলপ করে, তাহলে হয়ত কিছু মানুষের জীবনকে বাঁচানো যেতে পারে। এছাড়া, মানুষ ফাঁকা মাঠে থাকলে তাঁদের জন্য নিরাপদ জায়গা তো নেই। তখন সংকুচিত হয়ে বসে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। ক্যাভিটির মধ্যে ঢুকে গেলে অনেকটা নিরাপদ। কিন্তু, ফাঁকা মাঠে তো ক্যাভিটি থাকে না।"
বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে সত্যজিৎ চক্রবর্তী বলেন, "মেটালিক সেন্টারের সংখ্যাটা আমরা বাড়াতে পারি। মাঠে-ঘাটে যেখানে মানুষ কাজ করছেন বা ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলো করছে সেখানে যদি মেটালিক সেন্টার করা যায়। বজ্র নিরোধকের পরিমাণটাকে বাড়াতে হবে। সঠিক লাইটনিং অ্যারেস্টার লাগাতে হবে। সেটাকে এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের জন্য গুড কন্ডাক্টর হতে হবে। কখনওই বড় গাছের তলায় দাঁড়ানো উচিত নয়। কোনও কিছুই না পেলে দাঁড়ানোর সারফেস এরিয়াটা কমিয়ে আনতে হবে এবং মাথাটা ঝুঁকিয়ে হাঁটুর মাঝখানে নিয়ে আসতে হবে।"