কলকাতা, 13 অক্টোবর: রাজ্যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক করিডর গঠনের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার তার বাস্তবিক রূপায়ণ নিয়ে বৈঠক করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এই বৈঠকে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন দফতরের সচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এডিবি অর্থাৎ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ফিকি এবং দেশে প্রথম সারির তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা ডেলয়েটের প্রতিনিধিরা। এছাড়াও ছিল বিভিন্ন শিল্প-মহলের প্রতিনিধিরা।
বাংলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে শিল্প স্থাপন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আনার এই শিল্প করিডর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আগেই জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। স্পেন সফরে গিয়ে বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী এই শিল্প করিডর গুলি তৈরীর কথা জানিয়েছিলেন। তারপরেই শুক্রবার নবান্নে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগম এবং দেশ-বিদেশের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির শিল্প সংস্থার আধিকারিকদের উপস্থিতিতে এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।
এই বৈঠকে নবান্নের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের চারটির মধ্যে তিনটি শিল্প করিডরের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে চায় রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে ওই তিন শিল্প করিডর গড়ার জন্য পরিকল্পনার বিষয়টি অনেকটাই এগিয়েছে। এই কাজের জন্য পৃথক নীতিও প্রস্তুত করেছে রাজ্য সরকার। এই তিনটি শিল্প করিডর হল, রঘুনাথপুর-তাজপুর, ডানকুনি-কল্যাণী এবং ডানকুনি-খড়্গপুর। এই করিডরগুলি তৈরি করে শিল্পপতিদের হাতে প্রয়োজনমাফিক জমি তুলে দেওয়ার বিষয়ও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার। করিডরগুলির দু’ধারে শিল্প স্থাপন করতে চায় রাজ্য। এর জন্য নবান্নের তরফে প্রায় আট হাজার একর জমি চিহ্নিত হয়েছ। এই করিডরকে সামনে রেখে রাজ্য বিপুল কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছে। মনে করা হচ্ছে এই তিন করিডর সম্পূর্ণ হলে যে শিল্প গড়ে উঠবে, তাতে প্রায় দু’লক্ষ কর্মসংস্থান হতে পারে।
একইসঙ্গে এই করিডরগুলি রাজ্যের যোগাযোগ মাধ্যম কেউ আমূল পরিবর্তন করে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে পাশাপাশি সড়কপথে বাংলাদেশ সিকিম তথা পূর্ব ভারতের সঙ্গে সংযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জন্যও একটি আলাদা শিল্প করিডরের ভাবনা রয়েছে রাজ্যের। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পানাগর থেকে কোচবিহার পর্যন্ত একটি করিডোর তৈরি করতে চায়। যে শিল্প করিডর উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলাকে সংযুক্ত করবে। এবং উত্তরবঙ্গে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটা নতুন ক্ষেত্র খুলে দেবে।
আরও পড়ুন: 'বিভাজনের চেষ্টা', সিভিক ভলেন্টিয়ারদের বেতন বৈষম্যে শুভেন্দুকে পালটা খোঁচা মমতার
এদিন মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ইকোনমিক করিডর গুলির পাশে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় আলোচনার সময় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিরা জানান তারা রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিকল্পনা মত ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করে দেবেন এবং প্রয়োজনীয় অর্থের একটা বড় অংশ তারা রাজ্য সরকারকে সহায়তা হিসেবে রাজ্য সরকারকে দিতে প্রস্তুত। ফলে রাজ্যের শিল্প এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আজকের এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। বাস্তব হল এটাই, এই শিল্প করিডরকে সামনে রেখেই বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছেন নবান্ন।