কলকাতা, 28 নভেম্বর: মালদায় হস্টেলের পাঁচতলা থেকে পড়ে নাবালিকা ছাত্রীর রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের। প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে সিআইডি, নির্দেশ হাইকোর্টের। পরিবারের অভিযোগ ছিল, তাঁদের মেয়েকে পরিকল্পনা করে ধর্ষণ ও পরে খুন করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
মামলার শুনানি পর্বে রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী শাশ্বত গোপাল মুখোপাধ্যায় আদালতে জানিয়েছিলেন, নাবালিকা ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তাই কোনও নিরপেক্ষ অথবা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের প্রয়োজন নেই। মানসিক অবসাদের জন্যই সে আত্মহত্যা করেছিল। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীর অভিভাবককে স্কুলে ডেকে পাঠানোর পরে সে আত্মহত্যা করেছিল।
সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল জানতে চেয়েছিলেন, অভিভাবককে স্কুলে ডাকা হয়েছিল তার তথ্য কোথায়? প্রথম চার্জশিট জমা করার সময় যে সমস্ত ব্যক্তিদের সাক্ষী নেওয়ার দরকার ছিল, তাঁদের কেন সাক্ষী নিলেন না তদন্তকারী আধিকারিকরা? সেই প্রশ্নের উত্তর এদিন আদালতে দিতে পারেননি সরকারপক্ষের আইনজীবী।
মৃত মেয়েটির বাবার পক্ষে আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, সরকারপক্ষের আইনজীবী তদন্তের কথা আদালতে জানিয়েছেন ৷ তবে সেই তদন্তে সাক্ষীদের নাম প্রথম চার্জশিটে নেই কেন? নাবালিকা ছাত্রীর বাবা নির্দিষ্ট করে খুনের অভিযোগ করলেও সেই অভিযোগ এফআইআর হিসেবে রুজু করেনি পুলিশ। পাশাপাশি ওই ছাত্রী পাঁচতলা থেকে নীচে পড়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে প্রথম যে চিকিৎসক চিকিৎসা করেছিলেন তাঁর কেন সাক্ষী নেওয়া হয়নি? প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী ৷
তিনি আদালতে অভিযোগ করে আরও জানান, ঘটনার প্রায় এক দশক হতে চললেও আজ পর্যন্ত মৃত ছাত্রীর বাবার কোনওরকম জবানবন্দি নেয়নি পুলিশ। তাহলে সেই পুলিশের উপরে কিভাবে আস্থা রাখবে পরিবার? প্রশ্ন আইনজীবীর ৷ হস্টেলের পাঁচতলা থেকে ছাত্রীর পড়ে যাওয়ার কথা স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পরিবারকে জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷ পাশাপাশি নীচে পড়ে যাওয়ার পর অনেকক্ষণ ছাত্রী জীবিত অবস্থায় ছিল তা সত্ত্বেও তার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আইনজীবী আশিসের।