রাজ্যের অসহযোগিতার অভিযোগ সাধু-সন্তদের কলকাতা, 14 ডিসেম্বর: বিভিন্ন ভাবে রাজ্যের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা করা হচ্ছে ৷ বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে না হলেও পরোক্ষ ভাবে এমনটাই অভিযোগ করেন 'লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ' কর্মসূচির উদ্যোক্তা সাধু-সন্তরা । আগামী 24 ডিসেম্বর লক্ষ কণ্ঠে ব্রিগ্রেড প্যারেড গ্রাউন্ডে গীতা পাঠের কর্মসূচির ঘোষণা করা হল এদিন ৷ সনাতন সংস্কৃতি সংসদ মতিলাল ভারত তীর্থ সেবা মিশন আশ্রম এবং অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদের পক্ষ থেকে যৌথভাবে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় এই কর্মসূচির কথা ৷
তাঁরা অভিযোগ করেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে । লাগাতার চালানো হচ্ছে প্রচার সভা । তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে । বারে বারেই তারা নাম না করে রাজ্যকে এই বিষয় দোষী করে । এই বিষয়ে আরও একটি উদাহরণ টেনে তারা জানান, টেট পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করে ওই দিন ফেলা হয়েছে । স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত সবারই অসুবিধা হবে ৷ আর যাঁরা আসতে আগ্রহী ছিলেন তাঁরাও হয়তো আসতে পারবেন না ।
এক লক্ষ নারী পুরুষ সমবেত কন্ঠে একসঙ্গে শ্রীমৎ ভাগবত গীতার প্রথম, দ্বিতীয় দ্বাদশ এবং পঞ্চম অধ্যায় পাঠ করবেন ৷ সাধুসন্তদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান পেতে চলেছে এই কর্মসূচি । সেই সঙ্গে ওইদিন 50 হাজার শঙ্খধ্বণি বেজে উঠবে । এটিও একটি বিশ্ব রেকর্ড । শুধু তাই নয়, গত বছরের মত এই বছরও গীতা পাঠের দিনে কাজী নজরুল ইসলামের গাওয়া 'হে পার্থসারথি বাজাও বাজাও' গানটি গাওয়া হবে ।
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হবে এই আমন্ত্রণ পত্রটি নির্গুণানন্দ মহারাজ জানান, গত বছর মায়াপুরের ইসকন মন্দিরে পাঁচ থেকে ছয় হাজার ভক্তবৃন্দ মিলে গীতা জয়ন্তীর দিন এই অনুষ্ঠানের সূচনা করে ৷ এই বছর এই অনুষ্ঠান দ্বিতীয় বর্ষের পদার্পণ করতে চলেছে। প্রধান অতিথি হিসেবে আসতে সম্মতি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । তাই সেই মতোই আগামী 24 ডিসেম্বর অর্থাৎ রবিবার গীতার মূল অধ্যায় পাঠের সময় ব্রিগেড উপস্থিত থাকবেন তিনি ।
জানা গিয়েছে যে আমন্ত্রণপত্রটি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে সেটি বাকি আমন্ত্রণপত্রগুলির চেয়ে অনেকটা আলাদা ভাবে তৈরি করা হয়েছে । রূপো দিয়ে গিল্টি করা কার্ডের উপর তামার হরফে লেখা রয়েছে পত্রে । মূল মঞ্চে সাধু-সন্তদের সঙ্গেই বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয় যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে তা যদি তিনি স্বীকার করেন এবং তিনি আসেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর স্থান কোথায় হবে? এই বিষয় তেমন স্পষ্ট কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ৷ তবে জানানো হয়েছে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী আসছেন তাই সেই ক্ষেত্রে একটি বিশেষ সিকিউরিটি প্রটোকল মেনেই আসনের ব্যবস্থা করা হবে ৷ আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে চণ্ডীপাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সেখানেও সাধু সন্তরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন ।
শুধু তাই নয়, এই অনুষ্ঠানের জন্য যে বিশেষ পোশাকেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ সেই বস্ত্র পরেই সবার সঙ্গে গীতা পাঠে বসবেন প্রধানমন্ত্রী । শুধুমাত্র সারা রাজ্য থেকে নয় সারা দেশ থেকে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে চলেছেন সাধু সন্ত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষজন । মোট 13টি ট্রেন ভাড়া করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহারাজ। ওই দিন কর্মসূচি শুরু হবে ঠিক সকাল 10 টা সময়। প্রধানমন্ত্রী আসবেন 11 নাগাদ।
আরও পড়ুন:
- পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ, অফিসারদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
- বৈঠকের গরহাজির শুভেন্দু, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে নপরাজিতের জায়গায় কি বাসুদেব!
- সমাবর্তনের দিন ঘিরে অনিশ্চিয়তা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, কাটল না জট