কলকাতা, 24 নভেম্বর: হাজিরা নিয়ে শীতকালীন অধিবেশনে কড়া তৃণমূল তথা নেত্রী মমতা ৷ এবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের বিরোধিতা করে কার্যত ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ফিরহাদ হাকিম ৷ মন্ত্রীরা এদিন সই করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে। দুপুর 12 টার আগেই বিধানসভায় পৌঁছে যান পৌর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এরপর পরিষদীয় মন্ত্রীর ঘরে গিয়ে নিজের নাম সই করে প্রবেশের সময় লিখে বেরনোর সময় ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমরা কি স্কুলে পড়ি, যে নিয়ম করে হাজিরা খাতায় সই করতে হবে ? দলের নির্দেশ, তাই সই করলাম।" এরপর অবশ্য তিনি আরও সংযোজন করে বলেন, "আমাদের সকলের দায়িত্ব আছে। নিজের দায়িত্ব পালন করুক সবাই। সেই দায়িত্ব না পালন করার জন্যই এই ঘটনা ঘটছে।"
আগেই জানানো হয়েছিল প্রত্যেক বিধায়ককে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিধানসভায় যেমন আসতে হবে, তেমনই থাকতে হবে অধিবেশনেও। সেই মতো শুক্রবার কার্যত হাজিরা খাতায় সময় লিখে উপস্থিতি দেখল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন নিয়মে ঢোকা এবং বেরনোর সময় সই এবং তাতে সময় লেখা বাধ্যতামূলক। আর তা নিয়েই এদিন কার্যত ক্ষোভের সুর শোনা গেল রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের গলায়। এদিন সাধারণ বিধায়কদের জন্য হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার ব্যবস্থা ছিল তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের ঘরে। মন্ত্রীরা সই করেছেন পরিষদীয়মন্ত্রীর ঘরে ৷ আর সেখানেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি ৷
আর ফিরহাদের এই মন্তব্যের পরই গুঞ্জন শুরু হয়েছে ৷ ভুলে গেলে চলবে না, এই নির্দেশ দিয়েছেন খোদ দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই কথা যিনি বলছেন তিনি তাঁর একান্ত অনুগত মন্ত্রীদের মধ্যে একজন। হঠাৎ করে কেন এই ক্ষোভের সুর শোনা গেল ফিরহাদের গলায়, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাহলে কি মন্ত্রী-বিধায়কদের যেভাবে নিয়মের বেড়াজালে বাঁধতে চাইছেন নেত্রী তা ঠিকমতো মন পসন্দ হচ্ছে না মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়রের ?
আসলে বারবার বলা সত্ত্বেও প্রত্যেক অধিবেশনে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে অনেক বিধায়কই ইচ্ছা খুশিমতো বিধানসভায় আসেন এবং চলে যান। এমনকী গরহাজিরার কারণও জানানোর প্রয়োজন পর্যন্ত মনে করেন না তাঁরা। বিষয়টা যে দল কোনওভাবেই ভালো চোখে দেখছে না আগেই জানা গিয়েছিল। বিশেষ করে বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন বিল নিয়ে আলোচনার সময় বিধায়ক, মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এসেছে। সে কারণেই এই কড়া নির্দেশ। গত অধিবেশনে বাংলা দিবস হিসাবে পয়লা বৈশাখ নিয়ে যে বিল পেশ হয়েছিল বিধানসভায় সেখানেও হাজিরা আশানুরূপ ছিল না। আর সে কারণেই দল কড়া হয়েছে এবার। এবার সেই নিয়মানুবর্তিতা নিয়ে কড়াকড়ি যে তাঁর না পসন্দ তা বুঝিয়ে দিলেন ফিরহাদ।