কলকাতা, 10 জুলাই: নাদিয়াল থানা এলাকার পঞ্চানন তলা এলাকা । অতীতে সাক্ষী থেকেছে ধর্মীয় উত্তেজনার । আমফানে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালুর মতো দাবিতেও এই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল (Communal Harmony)। তবে সেই সমস্ত তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ওই এলাকায় দুই সম্প্রদায়ের মানুষজন গড়ে তুলেছেন শান্তি কমিটি । দুর্গা পুজো, দোল, ঈদ বা মহরম কোনও উৎসবে আনন্দ যাতে বিন্দুমাত্র ম্লান না হয়, সেই পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখাই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য । শুধু কয়েকটি উৎসব নয়, বছরভর এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য দুই সম্প্রদায়ের মানুষজন এই কমিটিকে সামনে রেখেই কাজ করে চলেছেন ।
Communal Harmony: ঈদে ওয়াসিমদের সমস্যায় পাশে দাঁড়াতে এলাকায় টহল রুদ্রেন্দুদের
ঈদের ধর্মাচার পালনে যাতে এলাকার মুসলিমদের যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়, তাই সকাল থেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এলাকায় নামলেন হিন্দুরা (Communal Harmony)। দেশের বিভিন্ন অংশে যখন ধর্মের নামে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে চলেছে, তখন ঈদের দিনে কলকাতার পঞ্চাননতলা নজির গড়ল ।
রবিবার সকাল থেকেই একাধিক স্কুটি করে শান্তি কমিটির সদস্যরা এলাকা টহল দিতে শুরু করেন । কোথাও কোনও অসুবিধা বা সমস্যা দেখা দিলে তড়িঘড়ি তা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা । এ দিন ঈদ উপলক্ষে একটি শিবির করা হয় । সেখানে যেমন দুই সম্প্রদায়ের মানুষজন ছিলেন, সেরকমই ছিলেন স্থানীয় থানার আধিকারিকরা । ঈদের ধর্মাচার পালনের পর দ্রুত এলাকা পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেয় এই কমিটি । কলকাতা পৌরনিগমও এগিয়ে এসেছে । সব মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবেই এ দিন ওই এলাকায় ঈদ পালন করা হয় । হিন্দু মানুষজন দুপুর ও বিকেলের দিকে মুসলমানদের খেজুর, শরবত, ঠান্ডা জল বিলি করেন ।
আরও পড়ুন :সম্প্রীতির নজির ! মুসলিম দাদার কিডনিতে বাঁচল হিন্দু ভাইয়ের প্রাণ
এই প্রসঙ্গে বদরতলা শান্তি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রুদ্রেন্দু পাল জানান, "এলাকায় আমরা বছরের পর পর সব ধর্মের মানুষ এক সঙ্গেই বসবাস করি । তবে আগে ধর্ম কেন্দ্রিক কিছু ঘটনা এলাকায় ঘটে গিয়েছিল, যা আমাদের উভয় সম্প্রদায়ের মুক্ত চিন্তাধারার মানুষের কাছে বেদনার । তাই সেই রকম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তাই আমরা এই কমিটির মাধ্যমে বছরভর এলাকায় সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য, শান্তি, খুশি আনন্দ বজায় রাখার চেষ্টা করি । ঈদ বা দুর্গাপুজো সব উৎসবেই আমরা মিলিতভাবে আনন্দে গা ভাসাই ।"