কলকাতা, 1 নভেম্বর : হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে স্ত্রীকে খুন করে নিজেরই সন্তানকে খুনের চেষ্টা ৷ 17 বছরের সেই মেয়ে এখন হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে ৷ তা জানতে পেরে পুলিশি হেফাজতে আসার পর থেকেই বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছে মনোহরপুকুর রোডে খুনে অভিযুক্ত অরবিন্দ বাজাজ ৷ মেয়েকে দেখতে চেয়ে তার এই কান্না ৷
লালবাজার সূত্রে খবর, আলিপুর পুলিশ আদালতে পেশ করা হলে অরবিন্দকে 12 নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পান তদন্তকারীরা । খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য আজ তাকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে মনোহরপুকুর রোডের বাড়িতে । ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় একটি ধারালো অস্ত্র । পাশাপাশি পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন গোটা রাত সে নিজের মেয়ের কথা ভেবে কাঁদতে থাকে বলে জানা গিয়েছে ৷ মেয়ে বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েকে একবার দেখতে চেয়ে কাকুতিমিনতি করতে থাকে নিজের স্ত্রীকে খুনে অভিযুক্ত অরবিন্দ বাজাজ ।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে বাড়িতে অশান্তি হওয়ায় নিজের স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে মনোহরপুকুর রোডের বাসিন্দা অরবিন্দ বাজাজ । এই ঘটনার সময় সামনে মেয়ে চলে আসায় তাকেও খুনের চেষ্টা করে সে । 17 বছরের মেয়ে এখন এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করলেও ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর ।
আরও পড়ুন :Manohar Pukur Road Murder : স্ত্রীর ‘ঔদ্ধত্য’ সহ্য করতে না পেরেই খুন, দাবি কর্মহীন অরবিন্দর
প্রায় দু'বছর ধরে হাতে কোনও কাজ না থাকায় ছিল না টাকা পয়সাও । আর এই সুযোগেই স্ত্রী তাকে রাখতে চেয়েছিলেন পায়ের তলায় । এমনটাই অভিযোগ করে অরবিন্দ ৷ টাকা না থাকার ফলে স্ত্রীর কথায় উঠতে-বসতে হবে ৷ তার কথা মেনে করতে হবে সবকিছু ৷ না হলেই বাড়িতে চরম অশান্তি হত বলে জানায় সে । আর এই বিষয়ে তার স্ত্রীকে ইন্ধন জোগাত বাপের বাড়ির লোকেরা ৷ রোজই বাপের বাড়ি থেকে ফোন করে স্ত্রীকে শলা পরামর্শ দিত তারা । এই সব কিছু আর মেনে নিতে আর পারছিল না অরবিন্দ । রাত ভোর লালবাজারে পুলিশি জেরায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিল রবীন্দ্র সরোবর এলাকার মনোহরপুকুর রোডে স্ত্রীকে খুন ও মেয়েকে খুনের চেষ্টায় ধৃত অরবিন্দ বাজাজ ।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে অরবিন্দ জানায়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে আটটা নাগাদ প্রথমে বচসা থেকে আচমকাই বাড়িতে থাকা একটি ধারালো ছুরি দিয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবীর বুকের বাঁ দিকে প্রথমে কোপ মারে এবং পরে পেট ও ঘাড়-সহ শরীরের একাধিক অংশে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুন করে অরবিন্দ । মেয়েকে খুব ভালোবাসত সে । কিন্তু স্ত্রীকে খুন করার সময় মেয়ে বাধা দিতে এলে মেয়েকেও কোপ মারে আরবিন্দ । তারপর স্ত্রীর মৃত্যু হলে, মেয়েকে বাঁচানোর জন্য নিজেই অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করে সে । পাশাপাশি 100 ডায়াল করে পুলিশের কাছে সব ঘটনা খুলে বলে আত্মসমর্পণ করে অরবিন্দ ।
আরও পড়ুন :Murder : স্ত্রী-মেয়েকে কুপিয়ে পুলিশে ফোন ব্যক্তির