কলকাতা, 24 জুন: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে নামছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তৃণমূল দলায় সূত্রে খবর, আগামী 26 জুন উত্তরবঙ্গের কোচবিহার থেকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করবেন তিনি ৷ উল্লেখযোগ্যভাবে, এই জেলা থেকেই নবজোয়ার যাত্রার সূচনা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷ এবার সেখান থেকেই রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের নির্বাচনী কর্মসূচি শুরু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আগামী 8 জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ৷ প্রায় সাড়ে তিনশো ব্লকে 61 হাজার বুথে এক দফায় হবে পঞ্চায়েত ভোট ৷ কিন্তু তার আগেই নির্বাচনের মনোনয়ন ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণের একাধিক জেলা ৷ সংঘর্ষ, হানাহানি, বোমা-গুলির তাণ্ডবে প্রাণ গিয়েছে ন'জনের ৷ যার মধ্যে বিরোধীদলের কর্মীর পাশাপাশি শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরাও আছে বলে জানা গিয়েছে ৷ এর মাঝেই আসরে নেমেছেন খোদ রাজ্যপাল ৷ সংঘর্ষ বিধ্বস্ত ভাঙড় পরিদর্শন করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে রাজভবনে পিস-রুম খুলেছেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস ৷ যা নিয়ে আগেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এবার পঞ্চায়েতের প্রচারে নেমে মমতা সেই বিষয়ে আরও সুর চড়াতে পারেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷
শুক্রবার পটনায় অবিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠক থেকে বিজেপিকে উৎখাত করার ডাক দিয়েছে সবক'টি দল ৷ এর মাঝেই ঝাঁঝালো সুরে খোদ রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন মমতা ৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে সমান্তরাল সরকার চালাচ্ছে রাজ্যপাল ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে মমতার গলাতে যে সেই ঝাঁঝ থাকবে, তা বলাই বাহুল্য ৷ বিরোধীদের পাশাপাশি রাজভবনও এখন শাসকদলের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুও হবেন তাও স্পষ্ট তৃণমূল সুপ্রিমোর বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই ৷ অন্যদিকে, তৃণমূলের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার থেকে কার্যত সামনের লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিই শুরু করতে চাইছেন মমতা ৷ পঞ্চায়েত ভোট সাধারণত স্থানীয় স্তরে হয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় স্তরের নেতারাই ভোটের হাল ধরেন। তারাই দলের মুখ হয়ে থাকেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দলের সর্বোচ্চ নেত্রীকে ময়দানে নামতে কেন হবে, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর এই ঘটনাকে বিরোধীরা তীব্র কটাক্ষ করছেন। "একটাই পোস্ট বাকি সব ল্যাম্প পোস্ট" বাক্য দিয়েও শাসক দল তৃণমূলকে করা আক্রমণ করছেন বিরোধী।
আরও পড়ুন: তথ্যের সঙ্গে বয়ানে মিল নেই, শিক্ষা সচিবকে ফের জেরা করতে চায় সিবিআই
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা জানান, তৃণমূলের যা কিছু আছে তা শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাকি সকলেই পরিবারের ভাগীদার। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, "এই পার্টিটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিমিটেড কোম্পানি। সেই কোম্পানিতে এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু জায়গা করতে চায়। কিন্তু মানুষের সমর্থন নেই। যা একটু আছে তা শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আছে। এখন এমন পর্যায় এসেছে যে আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাল ধরতে হবে। এছাড়া কোনও নেতারা কোথাও হাল ধরতে পারবে না।" সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাইনাস, তৃণমূল কংগ্রেস শূ্ন্য। তাই ভাইপোকে ময়দানে নামতে হয়েছিল। কিন্তু তা দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তাই ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ময়দানে নামতে হচ্ছে। তবে এসব করে কিছু হবে না, যা চুরি দুর্নীতি করেছে সাধারণ মানুষের কাছে তাই স্পষ্ট।"