কলকাতা, 21 জুলাই: 1993 কলকাতার রাজপথে 'নো আইডেন্টিটি কার্ড, নো ভোট'-এর দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে শহিদ হয়েছিল তৎকালীন যুব কংগ্রেসের 13 জন কর্মী। সে সময় এই অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী বর্তমান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনার পর থেকেই বাম সরকারের বিরুদ্ধে ফি বছর 21 জুলাই শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল ৷ কিন্তু এবার সেই মঞ্চ থেকে কার্যত বাম-কংগ্রেস নিয়ে নিশ্চুপ রইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ বরং বিজেপির বিরুদ্ধে যে ঝাঁঝ এদিন তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায় শোনা গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট বাম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুখ না খুলে আদতে জোট ধর্মই পালন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ৷
বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে মহাকরণ অভিযানের স্মৃতিতে প্রত্যেক বছর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে 21 জুলাই শহিদ দিবস পালন করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। খুব স্বাভাবিকভাবেই অতীতের স্মৃতি তথা শহিদ স্মরণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বারবার উঠে এসেছে তৎকালীন বাম সরকারের সমালোচনা। কিন্তু মূল ঘটনা থেকে 30 বছর পর কোথায় যেন সিপিএম নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ঝাঁঝালো আক্রমণ কিছুটা হলেও ম্রিয়মাণ। মুখ খুললেন না কংগ্রেস নিয়েও ৷ একুশের মঞ্চে মমতার সমালোচনা মূল কেন্দ্রবিন্দু এখন বিজেপি। এদিনের শহিদ দিবসের মঞ্চে বিজেপি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুর যতটা ঝাঁঝালো শোনালো সিপিএম বা কংগ্রেস নিয়ে ততটা নয়।
আর এখান থেকেই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে 21 জুলাইয়ের শহিদ তর্পণ যে সিপিএম বিরোধিতা থেকে, সেই জায়গা থেকে কি সরে আসছেন মমতা ? তথ্য বলছে সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে গিয়ে 26 টি বিরোধী রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ লড়াইয়ের শপথ নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শরিক সিপিএম এবং কংগ্রেসও। ওই মঞ্চে রাহুল-সোনিয়ার সঙ্গেই ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিতারাম ইয়েচুরীও। এরপর এদিনের বক্তব্য রাখার সময় বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, 'ইন্ডিয়া' জোট তাঁর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
তৃণমূল নেত্রী স্পষ্টভাবে এও বলেছেন তাঁর পদের প্রয়োজন নেই। কিন্তু বিজেপির বিদায়কে নিশ্চিত করতে হবে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 41 মিনিট 20 সেকেন্ডের বক্তব্যের সিংহভাগ জুড়েই ছিল বিজেপি বিরোধিতা। এর মধ্যে যেমন মণিপুর প্রসঙ্গ এসেছে, তেমনই প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর বলতে গিয়ে বাংলাকে টেনে আনার প্রসঙ্গ। একইভাবে ছিল 100 দিনের কাজ নিয়ে রাজ্যকে বঞ্চনা এবং রাজ্যের বিজেপি নেতাদের বাংলাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গও। কিন্তু দীর্ঘ বক্তৃতায় একমাত্র ভোট হিংসা নিয়ে বলতে গিয়ে বিগত বছরগুলির পরিসংখ্যানে বুদ্ধবাবুর সময়কার মৃত্যুর সংখ্যা তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এটুকুই ৷