কলকাতা, 30 অক্টোবর: আবারও মিডিয়া ট্রায়াল (Media Trial) নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বিচারপতিদের সামনে মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একইসঙ্গে গণতন্ত্র রক্ষা করতে বিচারপতিদের হস্তক্ষেপ চাইলেন তিনি (Mamata Banerjee ) ।
তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, যেভাবে সম্মানহানির চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার । পশ্চিমবঙ্গ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেসের (West Bengal National Juridical Science) 14তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রবিবার যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব-সহ অন্য বিচারপতিরা । এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, "দেশের আদালত অনেকটা ধর্মীয় স্থানের মতো । মানুষ বিপদে পড়লে বিচারের আশায় আদালতের দরজায় কড়া নাড়েন । সেই ধর্মস্থানের প্রতি মানুষের আস্থা এবং সম্মান যেন অটুট থাকে ।"
এদিন আইনের পড়ুয়াদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "মাথার রাখবেন আইন সবসময় 'ফর দ্য পিপল', 'বাই দ্য পিপল', 'অফ দ্য পিপল' । মানুষ যখন কোনও রাস্তা দেখতে পান না, তখন তাঁরা আদালতে যান ৷ কারণ তাঁরা আশা করেন, বিচার পাবেন । বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। কারণ এটা আমাদের মন্দির, মসজিদ, গির্জা । আমি বলছি না মানুষ বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়েছেন, তবে বর্তমান সময়ে পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে ।"
এরপর মমতা বলেন, "আমি জানি না, এটা সঠিক মঞ্চ কি না, কিন্তু এখন যা চলছে, সেটা নিয়ে আমি বলতে চাই । এখন অনেক কিছু চলছে । এখন বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল শুরু হয়ে যায় । আদালত রায় দেওয়ার আগেই এখন সংবাদমাধ্যম রায় শুনিয়ে দেয় ! এভাবে বিচারব্যবস্থা চলে না ।" বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা দেখিয়ে বলেন, মিডিয়া ট্রায়াল নয়, বিচার ব্যবস্থাই শেষ কথা । আমি বিশ্বাস করি বিচারব্যবস্থার অবশ্যই অবিচার থেকে মানুষকে রক্ষা করা উচিত । মানুষের কান্না শোনা উচিত ৷ এখন মানুষ দরজার পিছনে কাঁদছেন ।"
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগে হাইকোর্টের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এই মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। তবে রবিবার তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা অনুসারে, আদালতের বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল করে রায় দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, গণমাধ্যম এখন আইনব্যবস্থার উপর প্রভাব খাটাচ্ছে। যা একেবারেই সমীচীন নয়।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "এখন অকারণে মানুষকে হেনস্থা হতে হচ্ছে। চাইলেই কাউকে দোষারোপ করা যায় না। সম্মান চলে গেল সম্মান ফিরে পাওয়া যায় না ।" সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের প্রশংসা করে মমতা বলেন, "আমি আমাদের প্রধান বিচারপতি ললিতজিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই । মাত্র 2 মাস পদে থাকলেও তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন বিচারব্যবস্থা কাকে বলে । বিচারব্যবস্থায় মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে ।"
আরও পড়ুন: মিডিয়া ট্রায়ালের সুযোগ দেবেন না, প্রধান বিচারপতির সামনেই মন্তব্য মমতার