কলকাতা, 21 অক্টোবর: টালা ব্রিজ সংস্কারের সময় সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে আগামী দু'বছরের জন্য তৈরি হল বিশেষ রোডম্যাপ । বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ কসবায় পরিবহন দপ্তরে বৈঠক করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী । সেখানেই তিনি রোডম্যাপ তৈরির কথা জানান ৷
আজ বৈঠকে ছিলেন সরকারি ও বেসরকারি বাস ইউনিয়ন, মিনিবাস ইউনিয়ন, অটো ইউনিয়ন এবং লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ওলা ও উবারের প্রতিনিধিরা । পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দুবাবু বলেন, "আজ আমরা যে রোডম্যাপ তৈরি করলাম তাতে সবাই সম্মতি জানিয়েছেন । মিনিবাস ও অটো সংগঠনের প্রতিনিধিরা যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেগুলি দপ্তর বিবেচনা করে আগামী মঙ্গলবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । পাশাপাশি শুক্রবার লাক্সারি ট্যাক্সি যেমন ওলা ও উবার টালা সংলগ্ন রাস্তায় যাতায়াতের রোডম্যাপ জমা দেবে ।"
নর্থ কলকাতা মিনিবাস ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ নারায়ণ বসু বলেন,"আজ বৈঠকে আমরা শুভেন্দুবাবুকে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছি ৷ এই মুহূর্তে চিৎপুর ব্রিজের ওপর দিয়ে অনেক কম সংখ্যায় গাড়ি চলাচল করছে । তাই সেখান দিয়ে যাতে আরও বেশি গাড়ি চলাচল করে, সেই দিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছি । এছাড়া লক গেট ব্রিজ দিয়ে এতদিন পর্যন্ত ছোটো গাড়ি চলাচল করত । আমরা প্রস্তাব করেছি যাতে এই ব্রিজের উপর দিয়ে বাসগুলোকে একমুখী করে চালানো হয় । আর জি কর হাসপাতালের সামনে একটি সাবওয়ে তৈরির প্রস্তাব দিয়েছি । যাতে সাবওয়ে দিয়ে মানুষ রাস্তা পারাপার করতে পারেন । এর ফলে ব্রিজের উপরে যানবাহনের গতিও অনেকটা বাড়বে ।"
বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "গত 29 সেপ্টেম্বর টালা ব্রিজের উপর দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায় । এর ফলে বেসরকারি বাসের চালক ও মালিকদের কঠিন সংকটের মধ্যে পড়তে হয়েছে । তাই যাত্রীদের সুবিধার জন্য বিকল্প হিসেবে অন্যান্য রাস্তা দিয়ে বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে । এতে জ্বালানি খরচও বেড়েছে ৷ পাশাপাশি ঘুরপথের জন্য দু'পক্ষের বাস মালিকদের লোকসানও হচ্ছে । তাই উভয় রুটের প্রতিনিধিদের নিয়ে খুব শিগগিরই একটি বৈঠক করা প্রয়োজন । উভয় রুটের ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের ভাড়া বৃদ্ধি না করা ছাড়া উপায় নেই । মন্ত্রী আমাদের এই প্রস্তাবটি শুনেছেন । আগামী মঙ্গলবার পরিবহন দপ্তরের বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দুবাবু ৷"
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অটো ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও । অটো সংগঠনের সম্পাদক খোকন শীল বলেন, "টালা ব্রিজের ওপর ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অস্থায়ীভাবে সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত অটো চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । সেই দিন থেকেই ওই রুটে অটো চলাচল শুরু হয় । এই অস্থায়ী রুটে প্রথম দিকে আমরা 60টি গাড়ি চালাই । পরের দিকে আরও 40 টি গাড়ি দেওয়া হয় । এই মুহূর্তে ওই রুটে মোট গাড়ির সংখ্যা 100 । শুভেন্দুবাবু আমাদের ওই রুটে আরও বেশি সংখ্যায় গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন । 100টির জায়গায় 300টি অটো চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷"
মহালয়ার আগে টালা ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা রিপোর্ট জমা দেন নবান্নে । সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পুজোর ঠিক আগেই টালা ব্রিজের উপর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ভারী যানবাহন চলাচল ।