কলকাতা, 27 মে : কোরোনা আবহে চলতি বছর অনলাইনে চূড়ান্ত সেমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (MAKAUT) তথা রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় । সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতিও তুঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে । তৈরি হয়ে গিয়েছে পরীক্ষা নেওয়ার সফ্টওয়্যারও । ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, MCQ ফরম্যাটে হবে অনলাইন পরীক্ষা । তবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষার দিন ঘোষণা করা সম্ভব হবে না বলে জানাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্র বলেন, "আমাদের অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে । অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে । পড়ুয়াদের সেন্টারে গিয়ে কম্পিউটারভিত্তিক অনলাইন পরীক্ষা দিতে হবে ।" কতটা এগিয়েছে প্রস্তুতি? শুভাশিস দত্ত বলেন, "আমাদের পরীক্ষার সফ্টওয়্যার ডেভলপ করা হয়ে গিয়েছে । পেপার সেটারও ঠিক হয়ে গিয়েছে । তাঁরা অনলাইনেই প্রশ্নপত্র জমা দিতে পারবেন । অনলাইনেই তার মডারেশন করা হবে ।"
এবার রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত সেমেস্টারের পড়ুয়াদের MCQ ফরম্যাটের প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে । প্রশ্নের ধরন নিয়ে শুভাশিস দত্ত বলেন, "MCQ ফরম্যাটে পরীক্ষা হবে । কলেজ খুললে পড়ুয়ারা নিজেদের কলেজের ল্যাবে গিয়ে পরীক্ষা দেবেন । পুরো পরীক্ষা কম্পিউটারে হবে । এক ও দুই নম্বরের প্রশ্ন থাকবে । সহজ, মাঝামাঝি ও কঠিন, তিন ধরনের প্রশ্ন থাকবে ।" তবে, পরীক্ষার প্রস্তুতি চললেও এখনই পরীক্ষার দিন ঘোষণা করা সম্ভব হবে না বলে জানাচ্ছেন শুভাশিসবাবু । বলেন, "এখনও পরীক্ষার দিন ঠিক করা হয়নি । যতক্ষণ পর্যন্ত কবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ঠিক হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত দিন ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না । আমাদের লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ খোলার দিন থেকে একমাসের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া । যে দিনে সরকার আমাদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অনুমতি দেবে সেদিন থেকে একমাসের মধ্যে যে দিন পড়বে সেই দিন ঠিক করে নেব ।"
যে কোনও পরীক্ষা নেওয়ার আগে বহু কাজ থাকে । এই একমাস পরীক্ষার আগের সেই সব কাজের জন্য লাগবে বলে জানান পরীক্ষা নিয়ামক । তিনি বলেন, "ছেলেমেয়েদের ফর্ম ফিলাপ করাতে হবে । ফি নিতে হবে । কলেজগুলো পড়ুয়াদের থেকে ফি নেবে, তারপর তা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জমা করবে । তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড তৈরি করে পৌঁছে দিতে হবে । এছাড়া, কলেজে গিয়ে কম্পিউটার ঠিক আছে কিনা, ইন্টারনেট পরিষেবা ঠিক আছে কিনা, সেগুলো অডিট করার বিষয় আছে । প্রচুর অ্যাক্টিভিটি আছে ওই সময়টা । পরীক্ষার আগের কাজগুলোর জন্য কিছুটা সময় লাগবে ।" তবে, পরীক্ষা হয়ে গেলেই সাতদিনের মধ্যে ফল প্রকাশের জন্য প্রস্তুত রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় 200টি কলেজ আছে ও কোর্স সংখ্যাও প্রায় 200 । চূড়ান্ত সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে প্রায় 100টি কোর্সের । মূলত, 30 শতাংশ অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ও 70 শতাংশ ফাইনাল পরীক্ষার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয় পড়ুয়াদের । শুভাশিস দত্ত বলেন, "আমরা সাতদিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করে দিতে পারব । ওদের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের সঙ্গে কম্পাইল করতে যতটা সময় লাগবে । কলেজে আমাদের লোক যাবে । নিজস্ব সার্ভার সেট করবে । সেগুলো নিয়ে ফিরতে কয়েকদিন সময় লাগবে । তারপর আর দুই-তিন দিনে ফলাফল প্রস্তুত হয়ে যাবে । আমরা কমিট করছি না । তবে, আমরা ন্যূনতম সাতদিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাব বলে মনে করছি ।" এখন শুধু অপেক্ষা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যলয় খোলার ।