কলকাতা, 3 জুন: কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ ৷ বাংলা এই প্রবাদ বাক্যটির ব্যবহারিক ক্ষেত্র খানিকটা বদলে দিলেই বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাবে ৷ কী পরিস্থিতি ? বালাসোরে জোড়া ট্রেন দুর্ঘটনায় হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারতের প্রায় সব ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ৷ ঘুর পথে চলছে অধিকাংশ ট্রেন ৷ অভিযোগ এই পরিস্থিতিতে মানুষের অসহয়তার সুযোগ নিচ্ছে বাবুঘাট তথা ধর্মতলা সংলগ্ন বেসরকারি দুরপাল্লার বাস পরিষেবা দেওয়া সংস্থাগুলি ৷ সাধারণ সময়ের তুলনায় তিন থেকে পাঁচগুণ বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷
আর টাকা দিলেই যে টিকিট পাওয়া যাবে তা নয় ৷ অপেক্ষায় থাকতে হবে ৷ লাইন এলে তবেই মিলবে টিকিট ৷ তবে, কেন এত বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে টিকিটের ? যাত্রীদের অভিযোগ তাঁদের বলা হচ্ছে বাসে এসি চালানো হবে ৷ কিন্তু, কোথায় এসি ৷ নন-এসি বাসে করেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যাত্রীদের ৷ আর এভাবেই বিপদে পড়া মানুষজনের সঙ্গে 'দিনেদুপুরে ডাকাতি' চলছে বলে অভিযোগ ৷
উল্লেখ্য, রথের আগে আগামিকাল পুরীতে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা ৷ সেই উপলক্ষে বহু মানুষ পুরী, কটক, ভুবনেশ্বর ও ভদ্রকের ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন ৷ বিশেষত, পুরী যাওয়ার ট্রেন যাত্রী সবচেয়ে বেশি ছিল ৷ কিন্তু, বালাসোরে জোড়া রেল দুর্ঘটনার জেরে ট্রেন বাতিল ৷ তাই বাধ্য হয়ে বেসরকারি বাসের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে ৷ আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে দূরপাল্লার এই বাস সংস্থাগুলি ৷ 400 টাকার টিকিটের দাম দেওয়া হচ্ছে 1000 বা 1200 টাকা, 500 টাকার টিকিট বিকোচ্ছে 1500 টাকায় ৷ আবার কোনও কোনও বেসরকারি বাসের কাউন্টারে 400 টাকার টিকিট 2 থেকে আড়াই হাজার টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন:বালাসোরে রেল বিপর্যয়, মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকজ্ঞাপন পুতিন-সহ অন্যান্য রাষ্ট্রনেতাদের
অভিযোগ এভাবেই মানুষের অসহয়তার সুযোগের সদ্বব্যবহার করতে নেমে পড়েছে বেসরকারি দূরপাল্লার বাস সংস্থা ৷ কয়েকজন যাত্রী অভিযোগও করলেন এ নিয়ে ৷ এমনই এক যাত্রী এসকে নিয়াদ কাদরি ওড়িশার ভদ্রকের বাসিন্দা ৷ তিনি বলেন, ‘‘গতকাল 400 টাকা ভাড়া বলেছিল ৷ এখন বলছে সেই টিকিটের দাম 2000 টাকা ৷ আবার কেউ 2500 টাকাও দাম চাইছে ৷ আমার কাছে 1 হাজার টাকা আছে ৷ কী করে দেব ! টিকিটও পাচ্ছি না ৷’’