কলকাতা , 28 মার্চ : কোরোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে তিন সপ্তাহব্যপী লকডাউনের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ ফলে শহরের হোটেলগুলি বন্ধ । দোকানপাটও বন্ধ ৷ রাস্তাঘাটে লোকজন নেই বললেই চলে । এই অবস্থায় পথের কুকুরগুলি অভুক্তই থেকে যাচ্ছে । অযথা আতঙ্কে কুকুরদের বাড়ির উচ্ছিষ্ট খাবারও দেওয়া হচ্ছে না । পাছে কুকুরের মাধ্যমে কোরোনা ভাইরাস ছড়ায় । কুকুরের মাধ্যমে যে কোনও কোরোনা ভাইরাস ছড়ায় না , সে কথা স্পষ্ট করলেন রায়দিঘির বিধায়ক দেবশ্রী রায় । পাশাপাশি তিনি শহরের প্রায় তিনশো কুকুরকে খেতে দেন ৷
গতকাল থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত শহরের প্রায় তিনশো পথ কুকুরকে খাইয়েছেন দেবশ্রী রায় । 60 কেজি চালের ভাত এবং মুরগির মাংস রান্না করে কলকাতার ডালহৌসি, বড়বাজার, স্ট্যান্ড রোড চত্বরের অভুক্ত কুকুরদের নিজে হাতে খাইয়েছেন তিনি । ইতিমধ্যেই মুরগির মাংসের আকাল দেখা দিয়েছে শহরের বিভিন্ন জায়গায় । কাল থেকে যদি মুরগির মাংস না পাওয়া যায়, তাহলে কুকুরদের জন্য বিকল্প খাবার খুঁজে বার করেছেন দেবশ্রী । দুধের সঙ্গে চাল মিশিয়ে পায়েসের মতো করে শহরের কুকুরদের খাওয়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর ।
লকডাউনে বিপন্ন পথ কুকুরদের পাশে দেবশ্রী
গতকাল থেকে শহরের প্রায় তিনশো কুকুরকে মাংস-ভাত খাইয়েছেন দেবশ্রী রায় ৷লকডাউনের সময়সীমা পর্যন্ত প্রতিদিনই পথের অভুক্ত কুকুরগুলিকে খাবার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ৷ কেবলমাত্র সারমেয়দের জন্য তিনি ইতিমধ্যেই কয়েক বস্তা চাল মজুত করেছেন। লকডাউনে শহরের কোনও কুকুর যাতে অভুক্ত না থাকে, সেই কারণে পর্যাপ্ত খাবার মজুত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর ।
কোরোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যারা ইতিমধ্যেই কুকুরদের সন্দেহ করছেন, তাদের সম্পর্কে দেবশ্রী রায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ভুল ধারণা থেকে মানুষ বাড়ির কুকুর বা রাস্তার কুকুরকে মেরে ফেলতে চাইছে । কোরোনা ভাইরাসের ধারক এবং বাহক কেবলমাত্র মানুষ । যে কোনও ধরণের পশু বা কুকুরের মাধ্যমে এই রোগ সংক্রমিত হয় না বলে জানিয়েছেন তিনি ।
আপাতত প্রতিদিন নিয়ম করে দুপুর এবং রাতে শহরের কুকুরদের দু'বেলা পেট ভরে খাওয়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর । কুকুরের কামড়ের পর যাতে শরীরে বিষক্রিয়া না হয়, তার জন্য প্রতিষেধক নেওয়া রয়েছে এই তৃণমূল বিধায়কের । ইতিমধ্যেই অসংখ্যবার সারা শরীরে কুকুরের কামড় খেয়েছেন তিনি । তারপরেও রাস্তায় কোনও অসুস্থ বা অসহায় কুকুর দেখলে তিনি উদ্ধার করেন ।