কলকাতা, 1 মে : দেশজুড়ে লকডাউন । আর তাই অন্য রাজ্যে আটকে পড়েছেন এই রাজ্যের বহু মানুষ । শ্রমিক, পড়ুয়া এবং চিকিৎসার জন্য অন্য রাজ্যে যাওয়া অসুস্থ ব্যক্তিরাও রয়েছেন সেই তালিকায় । ঘুরতে গিয়েও আটকে পড়ছেন অনেকেই । ২৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিদের্শ প্রকাশিত হওয়ার পরই সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন (CITU) পশ্চিমবঙ্গ শাখার তরফে রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে চিঠি দিয়ে তাঁদের ফের আবার দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে ।
ঘরে ফিরতে চাইছেন লাখের বেশি পরিযায়ী শ্রমিকসহ অন্যান্যরাও । তাঁরা সেখানে কষ্টে আছেন বলে জানিয়েছেন CITU- র সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু ।
রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে চিঠিতে একাধিক বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে । অন্যান্য রাজ্যে তাদের রাজ্যের মানুষকে ফেরানোর জন্য নোডাল অফিসার নির্দিষ্ট করলেও, এই রাজ্যে তা এখনও করা হয়নি । অবিলম্বে এই রাজ্যে নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে । একইসঙ্গে বাইরের রাজ্যে আটকে থাকা এই রাজ্যের মানুষদের ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদ্ধতিগত প্রস্তুতি, অর্থাৎ তালিকা প্রস্তুতিকরণ সহ অন্যান্য খুঁটিনাটি কাজ অবিলম্বে শুরু করা জরুরি ।
"স্নেহের পরশ" আবেদনপত্রের অন্তর্গত তথ্যগুলি ব্যবহার করলে, কাজে কিছুটা সুবিধা হতে পারে । ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ফিরে আসা মানুষদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং তাঁদের বাড়িতে না ফিরিয়ে দিয়ে, অঞ্চলের স্কুল, কমিউনিটি হল ও অন্যান্য সরকারি স্থানগুলিতে কোয়ারানটিন ব্যবস্থা অবিলম্বে গড়ে তোলার দাবি জানানো হয়েছে ।
এই কাজে সরকার সামগ্রিক তথ্য স্বীকৃত ট্রেড ইউনিয়নগুলির কাছে দিলে ফিরিয়ে আনার কাজকে আরও সহজ করে তুলতে পারবে । কারণ, এই ট্রেড ইউনিয়নগুলি প্রতিনিয়ত আটকে পড়া ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে ।
রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানানোর পাশাপাশি CITU কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছে । দ্বিতীয় দফা লকডাউন ঘোষণা করার প্রাক্কালে CITU-র পশ্চিমবঙ্গ শাখাসহ রাজ্যের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরিযায়ী শ্রমিক সহ আটকেপড়া অন্যান্য মানুষকে ফিরিয়ে আনার জন্য চিঠি দিয়ে দাবি জানিয়েছিল ।
কেন্দ্রীয় সরকার পরিযায়ী শ্রমিকসহ অন্যান্যদের ফেরানোর কোনও দায়িত্ব গ্রহণ করেনি । এমনকি তাঁদের ফেরাতে কেন্দ্রীয় সরকার ট্রেন বা বিমান চালানোর কোনও ব্যবস্থাও নেয়নি । তাঁদের ফেরানোর প্রশ্নের সমস্ত দায়িত্ব রাজ্য সরকারের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে । পরিবহনের খরচ, রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ আনুষাঙ্গিক সামগ্রীর জন্য কোনও অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার বিনিয়োগ করেনি ।
এইদিকে দ্বিতীয় দফার লকডাউন ঘোষণার আগে শ্রমজীবী এবং দরিদ্র মানুষকে তাঁর বৃহত্তম পরিবার বলে উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী । তাঁদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সমস্যা কমানোর কাজ করবে কেন্দ্র । অথচ বাস্তবে কেন্দ্রীয় সরকার, ফতোয়া দেওয়া ছাড়া কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি । CITU-র সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু জানান, আবারও রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকসহ আটকে পড়া অন্যান্য মানুষকে ফিরিয়ে আনার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দাবি জানানো হয়েছে ।