কলকাতা, 11 নভেম্বর : সাড়ে সাত মাসের প্রতীক্ষার অবসান । বুধবার রাত 2টো 40 মিনিটে রাজ্যে ফের গড়াল লোকাল ট্রেনের চাকা ৷ হাওড়া থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ল মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে ৷ কোরোনা সংক্রান্ত প্রোটোকল মেনেই চলল ট্রেন ৷ ট্রেনের গায়ে সেঁটে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকা ৷ বসার আসন চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে ৷
লোকাল ট্রেন ৷ শহর থেকে শহরতলি, গ্রাম থেকে শহরের লাইফ লাইন বলা চলে ৷ কোরোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এই লোকাল ট্রেনের চাকা ৷ স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় পড়েছিলেন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ৷ তবে ট্রেন ফের চালু হলে বাড়তে পারে কোরোনা সংক্রমণ ৷ সেকথা মাথায় রেখে একগুচ্ছ নিয়ম-কানুন মেনেই রাজ্যে ফের চালু হল লোকাল ট্রেন ৷
নির্দেশিকা আছে ৷ ট্রেনে আসনও নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে ৷ কিন্তু কোরোনা পরিস্থিতির পরবর্তী লোকাল ট্রেনে কতটা মানা হল সেই নির্দেশিকা? সামাজিক দূরত্বের বা কী হল ? প্রশ্ন ছিল প্রচুর ৷
পূর্ব রেলের অন্যতম ব্যস্ত শাখা শিয়ালদা-বনগাঁ শাখা ৷ সেখানে ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি ৷ তবু বজ্র আঁটুনির ফসকা গেরো দেখা গেল সেখানে ৷ এই শাখার সমস্ত স্টেশনে ছিল পুলিশ ও RPF এর টহলদারি ৷ কিন্তু ট্রেন স্টেশনে আসলেই শিকেয় উঠেছে নিয়মবিধি, নির্দেশিকা ৷ আর সামাজিক দূরত্ব ? শব্দটা বোধহয় অভিধানেই ছিল না ৷
টিকিট কাউন্টার ও প্ল্যাটফর্ম চত্বরে সামাজিক দূরত্ববিধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চক্র আঁকা হয়েছিল । প্রথম দিকে দূরত্ববিধি মানা হলেও বেলা বাড়তেই সে সব শিকেয় ওঠে । বনগাঁ শাখার গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন বনগাঁ, ঠাকুরনগর, হাবড়া, বারাসত, মধ্যমগ্রাম ও দমদমে সর্বত্র একই ছবি । স্টেশনের প্রবেশপথে থার্মাল চেকিং, স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা ছিল । যাত্রীরা মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন । কিন্তু ব্যস্ত স্টেশনগুলোর টিকিট কাউন্টারের সামনে ছিল ভিড় । মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ববিধি । ট্রেনের ভিতরেও সিটে দু'জন বসার কথা থাকলেও তিন জন বা চারজন বসেছেন । গা ঘেঁষেও বসেছেন অনেকে । ট্রেনে ওঠার আগে প্ল্যাটফর্মের চক্রের উপরে দাঁড়ানোর নিয়মও মানেননি অনেকেই ।
যাত্রীদের মধ্যেও নানা জনের নানা মত ৷ কেউ কেউ বলছেন, ‘‘ কোনও সিস্টেম নেই ৷ এক ঘণ্টা পর একটা ট্রেন ৷ অফিস যেতে এমনই দেরি হয়ে যাচ্ছে ৷ এতদিন পর যখন ট্রেন চালু হয়েছে তাহলে কেন কোনও সিস্টেম তৈরি করা হয়নি ?"