কলকাতা, 18 জুন: 'বাবা'- শব্দের পরিভাষা এক এক জনের কাছে এক একরকম ৷ বাবা শব্দটা শুনলেই মনে পড়ে দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা ৷ বাড়ির সব দায়িত্ব-কর্তব্য নিজের কাঁধে তুলে হাসিমুখে পরিবারকে আনন্দ দিয়ে যাওয়ার নামই যে 'বাবা' ৷ এমনই একজন পিতা ছিলেন অরুণ কুমার দত্ত ৷ যিনি আজ প্রয়াত ৷ অরুণ কুমার দত্তর ছেলে সুমিত দত্ত একজন আইনজীবী ৷ বর্তমানে তিনি সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন তাঁর বাবার চেষ্টাতেই ৷ সুমিত দত্ত মনে করেন, তাঁর বাবাই দ্বিতীয়বার তাঁকে জীবন দিয়েছেন ৷ তাই বাবার স্মৃতিতে শিল্পী সুবিমল দাসকে দিয়ে তৈরি করিয়েছেন একটি সিলিকনের মূর্তি ৷
অরুণ কুমার দত্ত বেঁচে নেই ৷ তবে বাবার স্মৃতিতে ছেলে সুমিত দত্ত বাবার সিলিকনের মূর্তি তৈরি করালেন ৷ এর পিছনে রয়েছে একটি কাহিনী ৷ 2012 সালে একটি মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন আইনজীবী সুমিত দত্ত ৷ বাড়িতে বিছানা ও হুইল চেয়ারে তাঁর জীবন সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ চিকিৎসকরাও হার মেনে নিয়েছিলেন ৷ অরুণ কুমার দত্তকে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আর কোনও দিন সুমিতবাবু চলাফেরা করতে পারবেন না ৷ চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলেও, চেষ্টা ছাড়েননি অরুণ কুমার দত্ত ৷ ছেলে সুমিতকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন তিনি ৷
ক্ষিদ্দা বলেছিলেন, ‘ফাইট কোনি ফাইট’ ৷ অরুণবাবুও তাঁর ছেলেকে সেই মন্ত্রই দিয়েছিলেন, ‘ফাইট সুমিত ফাইট’ ৷ তিনিই ছেলেকে আবার মামলা লড়ার জন্য বাধ্য করেছিলেন ৷ অরুণ কুমার দত্ত নিজে গাড়িতে করে ছেলেকে আদালত ও চেম্বারে নিয়ে যেতেন ৷ বাবার ইচ্ছেতেই মামলা লড়া শুরু করেন তিনি ৷ এরপর চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফের নিজের পায়ে উঠে দাঁড়ান আইনজীবী সুমিত দত্ত ৷ বর্তমানে তাঁর কোনও ওষুধ লাগে না ৷ একটা সময় লাঠি হাতে চলাফেরা করতেন ৷ এখন সেটাও লাগে না ৷
আরও পড়ুন:আজ পিতৃ দিবস ! কেন এই দিনটি শুরু হয়েছিল ? জেনে নিন বিস্তারিত