কলকাতা, 22 ডিসেম্বর: দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হল ৷ লালবাজার হাতে পেল এক উন্নতমানের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষাগার ৷ এর ফলে কলকাতা পুলিশের অনেক তদন্তেই এখন গতি বেড়েছে বলে জানা যাচ্ছে ৷
শহরে কলকাতা পুলিশের আওতাধীন যে কোনও থানায় যদি বিষক্রিয়া সংক্রান্ত অর্থাৎ বিষ খেয়ে আত্মহত্যা ও বিষ খাইয়ে খুনের ঘটনা সামনে আসত, সে ক্ষেত্রে ঘটনার প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট হাতে পেতে লালবাজারকে অপেক্ষা করতে হত অন্তত ছয় থেকে সাত মাস । ততদিনে সংশ্লিষ্ট ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক থেকে শুরু করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরাও অনেক সময় বদলি হয়ে যেতেন । ফলে ঘটনার রিপোর্ট পেতে অনেকটা সময় লেগে যেত । 2022 সাল থেকে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আরজি জানিয়ে অবশেষে লালবাজারের হাতে এল একটি অত্যাধুনিক মানের পরীক্ষাগার । সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাগারটি উত্তর কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
লালবাজার সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাগারটি উন্নত সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি । এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক বেশ কয়েকজন ল্যাবরেটরি কর্মীকেও যুক্ত করেছে লালবাজার । একজন প্যাথলজিস্ট এবং তিনজন ল্যাব টেকনিশিয়ান-সহ একজন ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট রয়েছে সেখানে । রয়েছে অত্যাধুনিক মানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি । যা বাস্তবায়িত করতে এক কোটি টাকা খরচ হয়েছে ৷
এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "এই আধুনিক মানের পরীক্ষাগারটি আমাদের হাতে আসার ফলে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট, যেগুলি তাড়াতাড়ি হাতে পাওয়া একপ্রকার অসাধ্য ছিল, সেই জমে থাকা রিপোর্টগুলি ধীরে ধীরে তদন্তকারীদের হাতে আসছে ।"
মূলত নাগরিকবৃন্দকে আরও ভালোভাবে পরিষেবা দেওয়ার জন্যই এই আধুনিক মানের পরীক্ষাগারটি নির্মাণ করা হয়েছে । কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের আওতাধীন বিভিন্ন থানায় বিভিন্ন সময়ে এমন বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহের যে রিপোর্ট তাড়াতাড়ি তদন্তকারীদের হাতে আসা প্রয়োজন ছিল, সেগুলি দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল । ফলে কোনও ঘটনায় কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে কি না, তা জানার জন্য সেখানে চার্জশিট দিতে সমস্যা হচ্ছিল পুলিশ কর্মীদের । সেই কারণেই নতুন পরীক্ষাগার আসার পরেই শুরু হয়ে গিয়েছে চটজলদি কাজ । ঠিক সেই মতোই সপ্তাহখানেকের মধ্যেই হাতে চলে আসছে, বিভিন্ন পোস্টমর্টেমের বা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে শুরু করে ঘটনাস্থলের নমুনার রিপোর্ট এবং দেহের রাসায়নিক নমুনার রিপোর্ট ।
আরও পড়ুন:
- কলকাতা পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে উন্নতমানের করতে চায় লালবাজার, নবান্নের সবুজ সংকেতের অপেক্ষা
- সাইবার ক্রাইমে 27 লক্ষ টাকা খুইয়েছিলেন পোর্ট ট্রাস্টের আধিকারিক, তদন্ত নেমে উদ্ধার করল লালবাজারের
- নতুন ওয়েবসাইট আনছে কলকাতা পুলিশের, আপদকালীন পরিস্থিতিতে সাহায্য হবে লালবাজারের