কলকাতা, 6 জানুয়ারি: সন্দেশখালির ঘটনার পর এবার শেখ শাহজাহানকে ধরতে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে ইডি। এমনটাই দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। শনিবার তিনি এক ভিডিয়ো বার্তায় জানিয়েছেন, 48 ঘণ্টার মধ্যে শাহজাহানকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইডি। যদিও সবটাই তাঁর শোনা কথা বলেও জানিয়েছেন কুণাল। সরকারিভাবে এখনও এর সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।
এ বিষয়ে মুখ খোলেনি রাজ্যের শীর্ষ কোনও কর্তা ৷ প্রশ্ন উঠছে রাজ্য সরকার যখন এই ঘটনার সত্যাসত্য স্বীকার করছে না, তখন কেন এমন কথা বললেন শাসকদলের মুখপাত্র ? ঠিক কী বলেছেন কুণাল ঘোষ ? শনিবার এক ভিডিয়ো বার্তায় কুণাল ঘোষ বলেন, "শাজাহানকে 48 ঘণ্টার মধ্যে আমাদের হাতে তুলে দিতে হবে, এইরকম নাকি ইডি জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে। আমরা তো এই কথাটাই গোড়া থেকে বলে আসছিলাম। রাজ্য সরকারকে লুটে না-নিয়ে সরাসরি বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে যাওয়া একটা অস্বাভাবিক দৃশ্যপট, এলাকার কোনও পরিচিত বা জনপ্রিয় মানুষের বাড়িতে দরজা ভাঙো, বাঁশ দিয়ে তালা পেটাও এই ধরনের ঘটনায় একটা উত্তেজনা তৈরি হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়ে যেতে পারে। ফলে যথাযথভাবে আপনারা চলে যাচ্ছেন গন্ডগোল শুরু হচ্ছে তারপর একটা রুটিন মেল পাঠাচ্ছেন এটা কেন হবে ? এখন যেটা পাঠাচ্ছেন সেটা তো আগে পাঠালে এই বিষয়টা কো-অর্ডিনেট করতে সুবিধা হয়। ফলে এই পাঠানো এবং না পাঠানো সমান।"
যদিও সরকারিভাবে ইডির তরফে আদৌ যোগাযোগ করা হয়েছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি। কারণ নবান্ন এই বিষয়ে স্পিকটি নট। ফলে কুণাল ঘোষের এই বক্তব্য নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। তাহলে তার এই বক্তব্যের ভিত্তি কী ? প্রসঙ্গত, শুক্রবার রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে সন্দেশখালিতে গিয়ে শাহজাহান শেখের নিজের এলাকার সরবেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। তাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও খবর। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। এদিন এই ঘটনায় সিপিএম ও বিজেপির তরফ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তোলার জন্য তাদেরও আক্রমণ জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। এই প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, "যে ঘটনাই ঘটে থাকুক বিজেপির চক্রান্তে তার সমর্থন আমরা করছি না। তবে সিপিএমের এই নিয়ে কিছু বলার অধিকার নেই। কমরেড মনে আছে দুষ্কৃতীদের ধরতে গিয়ে ডিসি পোর্ট বিনোদ মেহতা এবং তার দেহরক্ষীদের কীভাবে খুন হতে হয়েছিল। মনে আছে ওসি তিলজলাকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বাম জমানায় পুলিশ যখন অপরাধীদের ধরতে গিয়েছে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এসে তাদের কখনো প্রহার করেছে কখনো হত্যা করেছে। তারা আজকে সাধু সেজে বড় বড় কথা বলছেন। তারা কি ভাবছেন মানুষ সব ভুলে গিয়েছে।"
একইভাবে বিজেপি কেউ নিশানা করেছেন কুণাল, তিনি বলেন আমি এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে রয়েছি , এই পুরসভায় সারদার কয়েক লক্ষ টাকার ব্রাঙ্ক ড্রাফ ঢুকেছে। এই ব্যাংক ড্রাফ্টের অস্তিত্বই সুদীপ্ত সেনের বক্তব্যকে সত্য বলে প্রণাম প্রমাণ করছে। এই কথা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে অধিকারী পরিবার কয়েক কোটি টাকা সারদাকে ব্ল্যাকমেইল করে ঘুষ নিয়েছে। কেন এখানে সিবিআই দিয়ে আসছে না প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল।
আরও পড়ুন:
- রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন পৌরপ্রধান শংকর, ইডির গাড়ি লক্ষ্য করে ইট
- সন্দেশখালির ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজি ও বসিরহাটের পুলিশ সুপারকে অভিযোগ ইডির
- সন্দেশখালি কাণ্ডে এবার ইডির বিরুদ্ধেই এফআইআর পুলিশের