কলকাতা, 13 ফেব্রুয়ারি: শেষমেশ 'মহারাজের চিঠি'তেই টনক নড়ল কলকাতা পৌরনিগমের (Kolkata Municipal Corporation) ৷ জমা জলের দীর্ঘদিনের সমস্যা মেটাতে আসরে নামলেন পৌর আধিকারিকরা ৷ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) নির্দেশে কলকাতার লোয়ার রাউডন স্ট্রিটের নিকাশি পরিকাঠামো ঘুরে দেখলেন তাঁরা ৷
8/1,এ লোয়ার রাউডন স্ট্রিট ৷ এই ঠিকানায় রয়েছে পুরনো একটি বাংলো ৷ বহুমূল্যের এই বাড়িটির বর্তমান মালিক ভারতীয় ক্রিকেটদলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷ কিন্তু সমস্য হল, সামান্য বৃষ্টিতেই বাংলোর সামনে জমে যায় হাঁটুজল (Waterlogging Problem on Lower Rawdon Street) ৷ ঘটনায় বিরক্ত 'মহারাজ' ৷ সমস্যা সমাধানে সরাসরি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দ্বারস্থ হন তিনি ৷ গত 7 জানুয়ারি এই মর্মে মেয়রকে চিঠি পাঠান সৌরভ (Sourav Ganguly Letter to Firhad Hakim) ৷ তাতে তাঁর নতুন ঠিকানার সামনের রাস্তায় জল জমার সমস্যাটি তুলে ধরেন তিনি ৷ একইসঙ্গে, সমস্যা সমাধানের আর্জিও জানান ৷
আরও পড়ুন:বৃষ্টি হলেই জল জমে নতুন বাড়ির সামনে, সুরাহা চেয়ে মেয়রকে চিঠি মহারাজের
সৌরভের চিঠি পাওয়ার পরই তৎপর হন মেয়র ৷ তাঁর নির্দেশে লোয়ার রাউডন স্ট্রিটে আসেন কলকাতা পৌরনিগমের নিকাশি বিভাগের ইঞ্জিনিয়ররা ৷ তাঁরা গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন ৷ খতিয়ে দেখেন নিকাশি পরিকাঠামো এবং সেই সংক্রান্ত সমস্যাগুলির উৎস ৷ পৌর আধিকারিকরা স্বীকার করে নিয়েছেন, জমা জলের সমস্য়া এই এলাকায় নতুন কিছু নয় ৷ তবে, সেই সমস্য়া দ্রুত মিটে যাবে বলেই আশ্বাসবাণী শোনাচ্ছেন তাঁরা ৷ পৌরনিগমের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই এলাকার নিকাশি সংস্কারের জন্য 'ওয়ার্ক অর্ডার' ইতিমধ্য়েই বের করা হয়েছে ৷ এখন পুলিশের ছাড়পত্রের অপেক্ষা ৷ সেটি মিললেই কাজ শুরু হয়ে যাবে ৷ এই প্রসঙ্গে লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা জানান, তাঁদের কাছে কাজ শুরুর অনুমতি চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৷ নিয়ম মেনেই সেই আবেদন মঞ্জুর করা হবে ৷ পৌরনিগমে কাজ করতে যাতে কোনও সমস্য়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় থানা যা পদক্ষেপ করার তাই করবে ৷
পৌরনিগমের এই উদ্যোগে স্বাভাবিকভাবেই খুশি এলাকার বাসিন্দারা ৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, এতদিন কেন এই উদ্যোগ দেখানো হল না ? পৌর আধিকারিকরা নিজেরাই মানছেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় বহু বছর ধরে জল জমে ৷ যার জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমজনতাকে ৷ কিন্তু, সেই সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি ৷ অথচ, একজন সেলিব্রিটি অসুবিধার কথা জানিয়ে মেয়রকে চিঠি লিখতেই তড়িঘড়ি কাজে হাত দিল পৌরনিগম ! পৌর প্রশাসনের এমন মানসিকতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে ৷ প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সেলেবদের সমস্য়া কোটি কোটি আমজনতার সমস্যার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ? তবে উপলক্ষ যাই হোক, অবশেষে যে পৌরনিগমের ঘুম ভেঙেছে, তাতে খুশি ভুক্তভোগীরা ৷