নওশাদকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা কলকাতা, 20 জুন: আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ককে যত দ্রুত সম্ভব দিতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ৷ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ এই বিষয়ে কেন্দ্রকে দ্রুত বিবেচনা করার নির্দেশও দিয়েছে হাইকোর্ট ৷
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে চোপড়া, ক্যানিং-এর পাশাপাশি উত্তপ্ত ভাঙড়ের অশান্ত পরিবেশের সাক্ষী থেকেছে রাজ্য ৷ দফায় দফায় বোমা-গুলিতে মৃত্যুও হয়েছে ভাঙড়ের এক আইএসএফ কর্মীর ৷ এই পরিস্থিতিতে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন ভাঙড় বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী ৷ এরপরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছিলেন নওশাদ। তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন বলে সেই চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
এরপর সোমবার নিজের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক। এরপর তাঁকে প্রশ্ন করেন বিচারক ৷ তিনি বলেন, "আপনি তো আপনার নিরাপত্তার কথা বলছেন। ভাঙড়ের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে যে ব্যবস্থা হয়েছে তাতে আপনি কি সন্তুষ্ট?" জবাবে নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, "আমি ভাঙড়বাসীর নিরাপত্তার জন্য রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনেও গিয়েছি। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর দরজায় গিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় কোনও ক্ষেত্রেই সেরকম সদর্থক উত্তর পাইনি।"
অবশেষে মঙ্গলবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলাটি ওঠে ৷ বিচারপতির অভিমত, রাজ্যের বিশাল সংখ্যক বিধায়ক নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। ভাঙরের বিধায়কের বর্তমান নির্বাচনের পরিবেশে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়ার প্রয়োজন আছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থ্রেট বিবেচনা করে এই নিরাপত্তা দিতে হবে। আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানিতে এই নিয়ে কেন্দ্র তার রিপোর্ট দেবে।
আদালতে নওশাদের আইনজীবী ফিরদৌস শামীম বলেন, "এই রাজ্যে বিজেপির 77 জন বিধায়ক কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পান। রাজ্যের শাসকদলের বিধায়করাও পান। এমনকি শওকত মোল্লার মতো বিতর্কিত বিধায়কও জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান। নওশাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চান, রাজ্য পুলিশের নয়।" এক্ষেত্রে কেন্দ্রের আইনজীবী বলেন, "এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখায় এই রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে। তাই এখনই এত জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা দেওয়ার সমস্যা হবে।"
আরও পড়ুন : পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশই বহাল সুপ্রিম কোর্টে, খারিজ রাজ্যের আবেদন
এরপর আইনজীবী ফিরদৌস শামীম বলেন, "যেহেতু কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবেই আর ভাঙড়ে সেই বাহিনীর অংশ যাবে। সেখান থেকে বিধায়কে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।" দুই আইনজীবীর প্রশ্নোত্তর শোনার পরেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন, নওশাদ সিদ্দিকিকে নিরাপত্তা দেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। দ্রুত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। কতজন নিরাপত্তারক্ষী বরাদ্দ করা হবে তা মূল্যায়ণের পরেই জানা যাবে ৷